কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি হেফাজত আমিরের

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২১, ১৪:০১ | প্রকাশিত : ২৭ মার্চ ২০২১, ১৩:৫৫

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত তৌহিদী জনতার প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেয়া হবে।’ এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। প্রয়োজনে শীর্ষ ওলামাদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন হেফাজত আমির।

শুক্রবারের সংঘাত-সহিংসতার পর প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার তিনি গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে এসব কথা বলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দলের কর্মীরা ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। তাতে হাটহাজারীতে চারজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন নিহত হন বলে পুলিশ জানায়।

বিবৃতিতে নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে ডাকা বিক্ষোভে হামলায় নেতাকর্মী নিহত ও আহত হওয়ার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকে শনিবার (২৭ মার্চ) সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং রবিবার (২৮ মার্চ) সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হরতাল কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজত আমির।

বাবুনগরী বলেন, ‘মোদির আগমনের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম, যাত্রাবাড়ী, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত তৌহিদী জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে আনুমানিক ছয়জনকে শহীদ করা হয়েছে এবং গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে প্রায় ৪০০ প্রতিবাদী তৌহিদী জনতাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এভাবে পুলিশের গুলিবর্ষণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা কখনো মেনে নেয়া যায় না। কার নির্দেশে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্রদেরকে এভাবে হামলা ও শহীদ করা হলো, এর জবাব প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

হেফাজতের আমির বলেন, ‘তৌহিদী জনতার এ আন্দোলন দেশ কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। এই আন্দোলন ছিল মুসলমানদের রক্তখেকো, বাবরি মসজিদ ধ্বংসকারী মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তৌহিদি জনতার ওপর পুলিশের এমন বর্বরোচিত হামলা বরদাশত করা যায় না। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মোদির আগমনের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন তৌহিদি জনতা। বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরতের ওপর হামলার সংবাদ পাওয়া গেছে। হাটহাজারীতে আমার কলিজার টুকরা চারজন ভাইকে শহীদ করেছে পুলিশ। শহীদদের গা থেকে ঝরা এ রক্ত কভু বৃথা যেতে দেয়া হবে না। পুলিশের গুলিতে নিহত তৌহিদী জনতার প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেয়া হবে।’

মোদির আগমনের কারণেই বাংলাদেশে রক্ত ঝরেছে উল্লেখ করে তিন বলেন, ‘অনতিবিলম্বে মোদিকে বাংলাদেশ ছাড়তে হবে। ৯০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে মুসলমানদের খুনি মোদি থাকতে পারবেন না।’

হেফাজত নেতা বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় যারা শহীদ হয়েছেন আমি তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি। শহীদেরকে আল্লাহ তায়া’লা জান্নাতে উঁচু মাকাম দান করুন। এবং পুলিশের গুলিতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকার, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

বাবুনগরী বলেন, ‘মোদি ইস্যুতে যদি আর একজন তৌহিদী জনতার রক্ত ঝরে বা ওলামায়ে কেরামকে হামলা মামলা ও হয়রানি করা হয় তাহলে এর প্রতিবাদে পুরো দেশে আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে। প্রয়োজনে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :