চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৩০০ কোটি টাকার মালামাল ‘পাচারের চেষ্টা’

হাশেম তালুকদার, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০২১, ১৭:৫১

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে নষ্ট পণ্য ধ্বংসের নামে একটি চক্রের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার মালামাল পাচারের অভিযোগ উঠেছে। প্রতি বছর চক্রটি নষ্ট পণ্য ধ্বংসের নাম দিয়ে কাস্টমস অফিসের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় নামমাত্র মূল্য দিয়ে পছন্দের ব্যক্তিকে নিলামের নামে পাচার করে আসছে।

চক্রটি কয়েক কন্টেইনারের মালামাল লোক দেখানো নষ্ট পণ্য ধ্বংসের নামে ছবি তুলে বিভিন্ন কয়েকটি গণমাধ্যমকে দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করার পর বাকি কন্টেইনারের মালামাল বাইরে বিক্রি এবং ভালো পণ্যের কন্টেইনারও বন্দর থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বের করে আনাসহ নানান অভিযোগও রয়েছে।

জানা গেছে, বন্দর দিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমদানি করা ২৯৮ কনটেইনার পণ্য ধ্বংসের দিনক্ষণ ঠিক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ। এসব কনটেইনারে থাকা প্রায় ছয় হাজার টন ব্যবহার অযোগ্য পণ্য ঘোষণা করেন। ২৯ মার্চ ধ্বংস করার দিন তারিখ নির্ধারণ করেন। সোমবার ধ্বংস করার পেছনে একটি বিশেষ কারণও রয়েছে। বিষয়টি অনেকটা গোপণে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসেও নষ্ট পণ্য ধ্বংস করে কাস্টমস। কয়েক কন্টেইনার পণ্য ধ্বংস করা হলেও অধিকাংশ পণ্য বাইরে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। কাস্টমস

কাস্টমস সূত্র জানায়, এসব পণ্য ধ্বংসের জন্য নগরীর উত্তর হালিশহরের বে টার্মিনাল সংলগ্ন বেড়িবাঁধ রোডের চৌধুরী পাড়ায় অবস্থিত একটি খোলা জায়গা নির্ধারণ করেন। এর আগেও ২০১৯ সালে একই এলাকার অন্য একটি জায়গায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১৯৪ কনটেইনারের চার হাজার ৮০৭ টন ব্যবহার অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করা হয়েছিল। এসব পণ্য ধ্বংস করার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বন্দর, সিএমপি কমিশনার, কাস্টমসের প্রতিনধি উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক হলেও অনেক সময় এইসব সংস্থাকে না জানিয়ে বাইরে পণ্য পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, গত ২১ মার্চ কাস্টমস হাউসে এসব পণ্য ধ্বংস করার জন্য গোপণে এক মিটিং করেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা এবং ঠিকাদারসহ তার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। গত ২৫ মার্চ ধ্বংস কার্যক্রম কমিটি থেকে জেলা প্রশাসক, বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিটি মেয়র, পুলিশ কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসকে চিঠি দেয়া হয়। শুরু থেকে পণ্য ধ্বংস করার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর আপত্তি জানিয়ে আসছে। তাদের আপত্তি রয়েছে। পণ্য ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কে.এম কর্পোরেশনের ম্যানেজার (নিলাম) মোহাম্মদ মোরশেদ নষ্ট পণ্যের বের করার আড়ালে নামে বন্দর থেকে কন্টেইনারে মালামাল বের করার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির নিউটন দাশ নামে এক ব্যক্তি নষ্টপণ্য ধ্বংসের নামে কোটি কোটি টাকার মালামাল পাচারের অভিযোগ করে অর্থ মন্ত্রনালয়, এনবিআর চেয়ারম্যান, দুদকসহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেন।

অভিযোগে কন্টেইনারের মালামাল ধ্বংস করার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং এ ধ্বংস করা হলে রাজস্ব পাবে সরকার এবং কত কন্টেইনার মামলামাল ধ্বংস করা হয়েছে তার একটি তথ্যও সংরক্ষণ থাকবে। এটা না করে বাইরে নির্জন স্থানে গোপনে মালামালগুলো ধ্বংসের নামে বাইরে পাচার করে আসছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান বলেন, পণ্য ধ্বংসের কার্যক্রমটি আমরা শুরু করি আরো প্রায় চার মাস আগে। অফিসিয়ালি জটিলতার কারণে দেরি হচ্ছে বলে তিনি জানান। নিলামের নষ্ট পণ্যের নামে ভালো পণ্য বের করে পাচারের সুযোগ নেই বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :