নকশা জটিলতায় ৫ বছরেও নির্মিত হয়নি ফেনীর জহির রায়হান হল

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
 | প্রকাশিত : ৩১ মার্চ ২০২১, ১৮:১৫

ভেঙে ফেলার পাঁচ বছরেও পূণঃনির্মিত হয়নি ফেনী শহরের মিজান রোডস্থ শহীদ জহির রায়হান হল। প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় এ মিলনায়তনটি ছিল ফেনীর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু। একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনার কথা বলে ফেনী জেলা পরিষদ প্রায় পাঁচ বছর আগে এটি ভেঙে ফেলে। কিন্তু পূণঃনির্মাণ শুরু করা দূরের কথা, ভবনের নকশাও অনুমোদন হয়নি।

শহীদ জহির রায়হান মিলনায়তনকে ঘিরে ফেনীর ডজন খানেক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় ছিল। নিয়মিত নাট্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা হতো, হতো মহড়া। ভবন ভেঙে ফেলায় বেশিরভাগ সাংস্কৃতিক সংগঠনের অফিসগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখন অফিস বা মহড়া কক্ষের অভাবে ফেনীর সাংস্কৃতিক চর্চা যেন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী-সংগঠক ও সচেতন মহল বার বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে আবেদন জানালেও তাদের দাবিটি উপেক্ষিত রয়ে গেছে।

ষাটের দশকের শেষ দিকে ফেনী মহকুমা শহরের কেন্দ্রস্থল মিজান রোডের জেলা পরিষদ ভবনের সামনে ৪৩ শতাংশ জমিতে নির্মিত হয় 'ফেনী টাউন হল'। ৪০০ আসনের মিলনায়তনটিতে সাংস্কৃতিক চর্চা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হত।

মিলনায়তনের একপাশে ও ছাদে ১০টি পৃথক কক্ষ ছিল। এসব কক্ষে এক সময় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা গণগ্রন্থাগার, রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম চলত। পরে ফেনী পৌর কর্তৃপক্ষ কক্ষগুলো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বরাদ্দ দেয় । শহীদ জহির রায়হান মিলনায়তন ভবনের জমিটি মূলত জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় জেলা প্রশাসন মিলনায়তনটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফেনী পৌরসভাকে দায়িত্ব দেয়। কিন্তু জমির মালিকানা হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে সমস্যা থেকে যায়।

জেলা পরিষদের জায়গায় 'টাউন হল' হলেও দীর্ঘ তিন যুগ এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে ফেনী পৌরসভা। আশির দশকের শুরুতে ফেনী টাউন হলের নাম পরিবর্তন করে 'শহীদ জহির রায়হান মিলনায়তন' করা হয়। তখন থেকে মিলনায়তনের কক্ষগুলো নামমাত্র ভাড়ায় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে বরাদ্ধ দেয়া হয়।

২০০৮ সাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নিয়মিত সাংস্কৃতিক চর্চা করত এখানে। ২০০৮ সালের শেষের দিকে জেলা পরিষদ শহীদ জহির রায়হান মিলনায়তনটি ভেঙে সেখানে আরো বেশি আসনের একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এটি পুনঃনির্মাণের জন্য এডিবি থেকে দেড় কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্দও দেয়া হয়। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন নিয়ে জটিলতায় জেলা পরিষদ গত পাঁচ বছরে কাজ শুরু করতে পারেনি।

ফেনী থিয়েটারের সাবেক সমন্বয়ক কাজী ইকবাল আহম্মদ পরাণ জানান, মিলনায়তনটি ভেঙে ফেলায় বর্তমানে নাট্যচর্চার জন্য কাজ করা কষ্টকর। চর্চার অভাবে দিনদিন কর্মী কমতে শুরু করেছে। বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় ও আলোচিত নাট্যাচার্য প্রয়াত সেলিম আল দীন ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের নাট্যচর্চাও এ মিলনায়তন থেকে শুরু হয়েছিল।

ফেনী জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজ আহম্মদ চৌধুরী বলেন, 'ভবনের জন্য দেড় কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। নতুন বরাদ্ধ ও নকশা পেলেই কাজ শুরু করা যাবে। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিক চিঠি দেয়া হয়েছে।'

(ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :