সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে তিন গ্রামের মানুষের নদী পারাপার

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
 | প্রকাশিত : ০২ এপ্রিল ২০২১, ১৮:১৮

আশেপাশের প্রতিটি গ্রামের রাস্তাঘাট-সেতু একের পর এক নতুন নির্মিত হচ্ছে সেখানে একটি সেতুর অভাবে দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর পূর্ব ঘোনা গ্রামের ২০ হাজার মানুষের কষ্ট যেনো দেখার কেউ নেই। বর্ষাকালে এ দুর্দশা আরো তীব্র আকার ধারণ করে। নদী পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এমনকি রাতে মাঝি না থাকায় পারাপারে ভোগান্তি পোহাতে হয় গ্রামবাসীদের। রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগন্তির মাত্রা আরো বেশি।

এই গ্রামের তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে ছোট ফেনী নদী। অনেকটা দ্বীপের মতো রাজাপুর পূর্ব ঘোনা। এই গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন দড়ি টানা নৌকা দিয়ে পার হয়ে ফেনী সদরের বিরলী গ্রামে আসেন।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই নদী পার হওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। গ্রামবাসীর জন্য উপজেলা ও জেলা শহরে যাতায়েতের সহজ পথ হচ্ছে এটি। এই নদীর স্রোত বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ সময় মাঝি দড়ি টেনে নৌকা বাইতে রাজি হয় না। ফলে প্রায়শ ঝড়-বৃষ্টিতে এলাকাবাসীদের চরম কষ্ট পোহাতে হয়। এই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাশবর্তী ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী হাই স্কুল ও প্রাইমারী স্কুলে যাতায়াত করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

এছাড়া প্রতিদিন কয়েক হাজার গ্রামবাসী স্কুল, কলেজ, হাসপাতালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ সারতে জেলা ও উপজেলা শহরে এই নদী পার হয়ে যাতায়েত করে। প্রায়শ ঘটে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসী জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন বাছেত বলেন, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। প্রায় সময় এখানে নৌকা ডুবে যায়। পরে মানুষ সাঁতার কেটে নদী পার হয়। স্কুলপড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের এটা খুবই বিপদজ্জনক। অনেক ছাত্র ছাত্রীরা সাঁতার জানে না।

প্রবাসী হারুনুর রশীদ মৃধা জানান, রাজাপুর উত্তর ও পূর্ব ঘোনার জন্য বিরলী স্কুল ও বিরলী বাজার কাছে হওয়ায় পথচারী ও ছাত্র ছাত্রীরা এ নৌকা ঘাটাটি ব্যবহার করে থাকে। পূর্বঘোনা থেকে বিরলী স্কুল ও বাজার দেড় কিলোমিটার আর রাজাপুর বাজার হয়ে বিরলী ৪ কিলোমিটার। রাজাপুর ঘোনা থেকে রাজাপুর বাজার হয়ে বিরলী গাড়িভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা। অথচ নৌকা দিয়ে কম সময়ে জনপ্রতি পাঁচ টাকা দিয়ে বিরলী যাওয়া যায়। এই কারণে পথচারী ও স্কুলপড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা নৌকায় যাতায়াত করে।

বিরলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য কাজী আবিদুর রহমান জানান, ব্রিজের অভাবে এই গ্রামের মানুষদের সারাবছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রী এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নৌকা পার হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বেশি থাকায় প্রায়ই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। দ্রুত এখানে ব্রিজ না হলে যেকোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান, সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে নদী পারাপারে শিক্ষার্থী, গর্ভবতী মা ও সাধারণ রোগীরা কষ্ট পাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :