হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ এপ্রিল ২০২১, ১৭:২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে ঘটনায় প্রায় ৭২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ মালামাল লুটপাট ও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় পৌর নাগরিকরা পৌরসভার সেবা থেকে বঞ্চিত৷ গত সাত দিন ধরে বন্ধ রয়েছে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা অপসারণ।

শনিবার পাইকপাড়ার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘গানপাউডার ও পেট্রোল দিয়ে পৌরসভা কার্যালয় ও পৌর মিলনায়তনের সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে। হামলাকারীরা আমার বাসভবনেও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। বাসার নিচের একটি দোকানের মালামাল লুটপাট করে। হামলার কারণে পৌরসভার সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হামলায় পৌরসভার ট্রাকে ময়লা অপসারণের মেশিনটিও ধ্বংস করে ফেলে। ফলে ময়লা অপসারণ করা যাচ্ছে না। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। আবারো নাগরিক সেবা বিশেষ করে ময়লা আবর্জনা অপসারণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

২৮ মার্চ হেফাজতের হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয় ও পৌর মিলনায়তনে হামলা হয়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় সবকিছু। প্রথম তলা থেকে দ্বিতীয় তলা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নিচের গ্যারেজেও আগুনে পুড়ে মালামাল ছাই হয়েছে। পুরো পৌরসভা ভবন জুড়ে পোড়া গন্ধ। গ্যারেজে রাখা গাড়ি পুড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পৌরসভায় রক্ষিত বিভিন্ন নথি। পৌরবাসীর ১৫০ বছরের রেকর্ডপত্র পুড়ে গেছে।

পৌরসভার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হেফাজত কর্মী-সমর্থদের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে পৌরসভা কার্যালয়ের ২০টি স্টিলের আলমিরা, ২৫টি কাঠের আলমিরা, ১৮টি কম্পিউটার, পাঁচটি ল্যাপটপ, চারটি ফটোকপিয়ার মেশিন, ৩৪টি টেবিল, সাতটি সেক্রেটারিয়েট টেবিল, ১১৫টি চেয়ার, পাঁচটি এসি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও স্বাস্থ্য শাখার ১২টি ডিপ ফ্রিজ, চারটি সাধারণ ফ্রিজ, ভ্যাকসিন, সিলিং ফ্যান, স্টোরে রক্ষিত ১০ হাজার এলইডি বাতি, তিন হাজার বাতি সেড, ৫০ কয়েল বৈদ্যুতিক তার, ১৬টি গাড়ি, তিনটি রোড রোলার, একটি মশক নিধন গাড়িসহ আরও অনেক জিনিসপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়েছে।

পৌরসভার সংরক্ষণ শাখার মালামাল, স্টেশনারি মালামাল, বাড়ির প্ল্যান অনুমোদনের পে-অর্ডারসহ নথি, চেক রেজিস্টার, ইস্যু রেজিস্টার, ক্যাশবই, অ্যাসেট রেজিস্টার, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাক্তিগত নথি ও সার্ভিস বই, সকল রেজিস্টার, ঠিকাদারদের বিল-জামানতের নথিসহ বিভিন্ন মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে। পৌরসভার মালিকানাধীন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনটিও আগুনে পুড়িয়ে দেয় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা। এদিকে ঘটনার পর থেকে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা অপসারন বন্ধ রয়েছে। এতে শহরের বিভিন্ন সড়কের মোড়ে ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমা হয়েছে। গত কয়েকদিনে এসব বর্জ্য সরাতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে মারাত্মক দূর্গন্ধে চরম দূর্ভোগে পড়েছে পৌরসভার বাসিন্দারা।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের সঙ্গে পৌরসভার কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই ঘটনায় পৌরসভার সচিব বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেছেন। পৌরসভায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭২ কোটি টাকা।

(ঢাকাটাইমস/৪এপ্রিল/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :