কবিতা
মায়ের মুক্তির একাত্তর
প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০১
আমার মায়ের বসত ভিটা, মায়ার আঁচল,
আদুরে বুলি, সোহাগের কোল, স্নেহের পরশ,
বুকের পিঁজরের উষ্ণতায়,
আমার কাঁধেই তার সব ভার নিয়েছি নির্দ্বিধায়।
মায়ের সকল হাসি কান্নায়,মিলন বিরহে,
চাওয়া না-চাওয়ায়, হর্ষ রোদনে,
পীড়া ও নিদানে; যাপিত জীবনে
আমি হবো তার ছায়া,
হাওয়ার কোরাসে চলবে মায়ের বিজয়ের গান গাওয়া।
মায়ের জন্যে মান দিতে পারি, প্রাণ দিতে পারি,
দিতে পারি আমার যা আছে সব,
মায়ের মুখের হাসিতে দেখবো জীবনের উৎসব।
মায়ের জন্যে ঝাঁপ দিতে পারি অগ্নিকুণ্ডে, অথৈ সাগরে,
হানা দিতে পারি যমেরও ঘরে।
মায়ের পায়ের তলায় রয়েছে তার জমিনের
যতোগুলো পুত-পবিত্র ধুলিকণা,
প্রতিকণা আমার ভক্তির অর্চনা।
যতো নদী বয়, যতো ফুল ফোটে, যতো পাখি গায়,
জোনাকিরা যতো সোনা আলো জ্বালে-
আমার মায়ের মুলুকে,
আমি তার সবি আগলে রাখবো বুকে।
যতো বলাকারা পাখা মেলে ওড়ে,
যতো রাঙা ঘুড়ি সুতো কেটে ঘোরে,
মেঘের যতো ভেলারাই ভাসে-
মায়ের মমতার সুনীল আকাশে,
প্রহরির মতো রয়েছি আমি তাদেরও পাশে।
শণ শণ বায়ু, মৃদু সমিরন, বৃষ্টি বাদল, বৈশাখি ঝড়,
বজ্রপাত বা বিজুলি চমক— যা ঘটে মায়ের সীমানায়,
আমিই রয়েছি ও-সবের পাহারায়।
বর্ণমালার শিরায় শিরায় বুকের রক্ত ঢেলে
স্লোগানে স্লোগানে কন্ঠে কন্ঠে বুলির আকুতি পুষে—
এনেছি মায়ের ভাষার অমর একুশে।
স্বপ্ন-ডানায় ভর করে উড়ে, মাতমের তেরো নদীও পেরিয়ে;
পাড়ি দিয়ে শেষে রক্ত ঢেউয়ের সপ্ত সমুদ্দুর—
এনেছি মায়ের মুক্তির একাত্তর।