টেক্সাসে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৩৭ | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫৫

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১টার দিকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। খবর ফক্সনিউজের।

পুলিশ বলছে, দুই ভাই পরিবারের চার সদস্যকে হত্যা করার পর তারা নিজেরাও আত্মহত্যা করেছে। 

নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। তবে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দুজন টিনেজ ভাই, তাদের এক বোন, তাদের বাবা-মা এবং দাদি রয়েছেন।

দুই ভাই ‘সুইসাইড নোট’ রেখে গেছেন। এই নোট থেকে মনে করা হচ্ছে, তারা হতাশায় ভুগছিলেন। পরিবারকে লজ্জা ও কষ্ট থকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দুই ভাই সবাইকে হত্যা করে নিজেরা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে। পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ওই পরিবারের এক বন্ধু তাদের ফোন করে পাচ্ছিলেন না। এরপর তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ওই ঘরে ছয়জনের লাশ দেখতে পায়। বন্দুকের গুলিতে ছয়জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাড়িটি থেকে বন্দুকও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ১৯ বছর বয়সী যমজ ভাই-বোন ফারহান তৌহিদ ও ফারবিন তৌহিদ, বড় ভাই তানভীর তৌহিদ (২১), মা আইরিন ইসলাম (৫৬), বাবা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), তানভীর তৌহিদের নানি আলতাফুন্নেসা (৭৭)।

অ্যালেন পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাই চারজনকে হত্যার পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে। মানসিক বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা এই কাজ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনার আগে ফারহান তৌহিদ ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ ‘সুইসাইড নোট’ পোস্ট করেছেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি নিজেকে ও আমার পরিবারকে হত্যা করেছি।’

ফারহান আরও লিখেছেন কীভাবে তিনি নবম শ্রেণি থেকে মানসিক হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তাঁর বড় ভাইও হতাশার সঙ্গে লড়াই করেছেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ফারহান লেখেন, তাঁর ভাই বলেছেন, ‘আমরা যদি এক বছরে সবকিছু ঠিক করতে না পারি, তবে আমরা নিজেদের ও পরিবারকে হত্যা করব।’

নিজেরা আত্মহত্যা করলে পরিবার লজ্জায় পড়বে। তাই লজ্জা ও কষ্ট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্যদের হত্যা করে নিজেদের আত্মহত্যার কথা সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে বলে পুলিশের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে। সুইসাইড নোটে হত্যার পরিকল্পনার কথাও লেখা আছে।

মরদেহ উদ্ধারকারী অ্যালেন পুলিশের সার্জেন্ট জন ফেলটিকে বলেছেন, তিনি ২১ বছর ধরে শহরটিতে আছেন। এমন দুঃখজনক ঘটনার মুখোমুখি তিনি আগে কখনো হননি। পুরো ঘটনাকে মর্মান্তিক বলে উল্লেখ করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গত শনিবার কোনো এক সময় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। মেডিকেল পরীক্ষার পর এ বিষয়ে জানা যাবে বলে নগরীর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

ওই পরিবারের পরিচিত দিলারা হাসান বলেছেন, এমন কোনো ঘটনা এই পরিবারে ঘটতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। বাইরে থেকে পরিবারটিকে সুখী বলেই তাঁর মনে হয়েছে।

টেক্সাসে বসবাসরত অপর প্রবাসী মিজান রহমান বলেছেন, সব সময় হাসিখুশি থাকা পরিবারটিতে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনিও বিশ্বাস করতে পারছেন না। বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য ঘটনাটি মর্মান্তিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/কেআর)