‘অন্য রোগীরা কী তাইলে মইরে যাবে’

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৭

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর বনশ্রী থেকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ মাকে নিয়ে এসেছেন ইয়াসমিন। হাসপাতালে এসে জানতে পারেন এখানে করোনা রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয় না।

অনেক ভোগান্তির পর মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসে আরও বড় বিপদে পড়েন ইয়াসমিন। অনেকটা আক্ষেপ করেই বললেন, করোনা ছাড়া অন্য রোগীরা কি তাইলে মইরে যাবে? তাদের চিকিৎসা কিডা করবে? প্রাইভেট কিলিনিকে নেয়ার টাকা থাকলে কি এইহানে আসা লাগতো!

হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে কয়েকটি হাসাপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে মুগদা হাসপাতাল তার একটি। যে কারণে কোভিড আক্রান্ত রোগী ছাড়া অন্য কোনো রোগী এখানে ভর্তি করা হচ্ছে না।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একজন নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মুগদার হাসপাতালে প্রতিদিন আশপাশ থেকে প্রচুর রোগী আসে। যাদের বেসরকারি বা প্রাইভেট হাসপাতলে চিকিৎসা করার সামর্থ নেই। এই ধরনের রোগীদের একটু সমস্যা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন ছিল, তা না হলে গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। একটি হাসাপতালের ওপর আশপাশের মানুষের যে নির্ভরতা থাকে, এই হাসপাতালও তার ব্যতিক্রম না। তবে করোনার কারণে তাদের সেই সুযোগটি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে  অনেকেই এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

মুগদা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, করোনার চিকিৎসা করতে হলে অন্য রোগীদের চিকিৎসা করা কঠিন। যেহেতু এটা একটা ভাইরাসজনিত রোগ। আর এটা বৈশ্বিক মহামারি। যেখানে করোনা চিকিৎসা হবে সেখানে অন্য রোগীদের ভর্তি করা হলে সেটা তাদের জন্য বিপজ্জনক।

রোগীদের ভোগান্তি নিয়ে কথা বলেন হাসপাতালটিতে দায়িত্বরত একজন আনসার সদস্য। তিনি বলেন, সকাল হলেই অনেক ধরনের রোগী আসে। কিন্তু তাদেরকে ভর্তি করা হয় না।অনেকেই কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় হাসাপাতালের সামনে বাগানে বসে থাকে।  এই রোগীদের দেখলে আমাদেরও খারাপ লাগে।

এই আনসার সদস্য আরও বলেন, এই হাসপাতালে যারা আসে তাদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। যাদের বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার মতো টাকা পয়সা নেই। এরা যখন এখানে এসে ভর্তি হতে না পারে না তখন অনেকই মাথায় বা কপালে হাত দিয়ে বসে পড়ে।

এদিকে সোমবারের তথ্য অনুযায়ী মুগদা হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৩৩৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। 

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/এসআর/কেআর)