লকডাউনে মাদারীপুরে সবজির দাম বৃদ্ধি

প্রকাশ | ০৬ এপ্রিল ২০২১, ১৮:০৮

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর

প্রাণঘাতি করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় দেশব্যাপী লকডাউনে প্রভাব পড়েছে বাজারগুলোতে। অন্য জেলা থেকে সবজি সরবরাহ কম থাকায় মাদারীপুরে সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী। দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে সবজি বেশ সস্তাই ছিল। এখন বেশির ভাগ সবজি কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। কেজিপ্রতি বাড়তি দর ১০ থেকে ২০ টাকা। সবজি ছাড়া বাজারে অন্য পণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল। তবে ভোজ্যতেলের দাম আগের মতোই আছে। গরু-মুগরির মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। নির্দিষ্ট সময়ে বাজার মনিটরিং করার দাবি ক্রেতাদের।

আর বিক্রেতাদের দাবি, পণ্য আনা-নেয়ার পরিবহন ঝক্কি-ঝামেলার বাইরে রাখার।

মাদারীপুরের পুরান বাজারে গিয়ে জানা যায়, করোনার কারণে বাজারে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। তাই তো ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা মাথায় রেখেই কেনা-বেচা করছেন। তবে রবিবার থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন দেয়ায় সবজির বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল। কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। এর পেছনে কারণ হিসেবে দুষছেন, অন্য জেলা থেকে পণ্য সরবরাহ না করাকে। মাদারীপুরে আশপাশের জেলা থেকে যেসব সবজি আসে, যেমন প্রতিকেজি বরবটি ৫০-৬০ টাকা, দেশি শসা ৪০-৫০ টাকা, শিম ৭০-৮০ টাকা, মাঝারি লাউ প্রতিটি ৫০-৭০ টাকা, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা ও লম্বা বেগুন ৪০ টাকা। তবে স্থানীয়ভাবে সরবরাহকৃত সবজির দাম কম রয়েছে। বিশেষ করে পুঁই শাক, লাল শাক, পাটের পাতা, ডাটা, কমলি শাক। বাজারে বাড়তি দামের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের দিন কাটছে কষ্টে। সরকারের বাজার ব্যবস্থার উপর নজরদারি দাবি ক্রেতাদের।

মাদারীপুর পৌর মাকের্টে গিয়ে আরো জানা যায়, আগের মতোই আছে ভোজ্য তেলের দাম। প্রতিকেজি বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খোল তেল ১৩০ টাকা, সরিষার তেল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা। তবে মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৪০ টাকা, খাসি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। মুরগির দাম কমেছে। বয়লার কেজি ১২০ টাকা, কক ২০০ টাকা, লেয়ার ২১০ টাকা, সোনালী ২৩০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল প্রতিপ্রতি ২০ টাকা বেশি।

বিক্রেতাদের দাবি, লডকাউনে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। ক্রেতা কম আসায় লোকসানের মুখে খুচরা ব্যবসায়ীরা। সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

বাজার করতে আসা আবুল হাসান সোহেল জানান, ‘গত সপ্তাহে যেসব সবজি যে দামে কিনেছি, এখন সেসব সবজি ১৫ থেকে ২৫ টাকা বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে যে শাকসবজি আসে, তার কিছুটা দাম কম। লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব বিষয় সরকারের নজর দেয়া উচিত। না হলে মানুষের কষ্টের সীমা থাকবে না।’

মাদারীপুর পৌর বাজারের সবজি বিক্রেতা মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমরা যে দামে পাইকারি আনি, সেই মতোই বেচি। লকডাউনের আগে দাম কম ছিল, আমরাও কম দামে বিক্রি করছি। এখন পাইকারি মোকামেই দাম বেশি তাই দাম বেশি। আমাদের আগে আরো বেশি লাভ হতো, এখন লাভও কম হয়। আগের মতো ক্রেতাও বাজারে আসে না।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা জোরদার করেছি। কেউ ন্যায্য মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। লকডাউনের নামে কাউকে প্রতারণার আশ্রয় নিতে দেব না।’

(ঢাকাটাইমস/৬এপ্রিল/এলএ)