জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সরকার উদাসীন: প্রিন্স

প্রকাশ | ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৩১ | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সরকার উদাসীন বলে দাবি করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেছেন, সরকার গণবিচ্ছিন্ন বলেই করোনা মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের দুঃখ-দুর্দশা মোকাবেলায় তারা বরাবরই উদাসীন। সরকারের অপরিকল্পিত ও কাণ্ডজ্ঞানহীন পদক্ষেপে জনগণ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে নিপতিত। করোনা মোকাবেলায় এবং একইসাথে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীন মানুষের সহায়তায় সরকারের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ দাবি করেন তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ৫ এপ্রিল ২০২১ থেকে সাত দিনের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে। লকডাউনের দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশে আরও বেশি শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছে। মূলত গত মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতায় তা মোকাবেলায় কোনো কার্যকর ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই।’

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়ার সময় থেকেই বিশেষজ্ঞ মহল সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করলেও সরকার মূলত উৎসব আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে। বিএনপি করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণের প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে সরকারকে উৎসব আয়োজন স্থগিত করে করোনা মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানালেও সরকার সেই আহ্বানে কর্ণপাত করে নাই। বরং তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক গতিতে চালিয়ে জনগণকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। বাংলাদেশে সংক্রমণের হার রকেট গতিতে বেড়েই যাচ্ছে। গত এক মাসে সংক্রমণের হার ২ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘করোনা মোকাবেলায় সরকার হঠাৎ করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য বাংলাদেশে লকডাউন ঘোষণা দেয়। এমনিতে সরকারের ভ্রান্তনীতির ফলে জনগণের আয়-রোজগার সংকুচিত হয়ে গেছে। সরকারি দলের লোকজনদের সিন্ডিকেটের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবমূল্য আকাশচুম্বী। এসব কারণে জনগণ দিশেহারা। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের এই আকস্মিক ঘোষণায় নিম্নআয়ের মানুষসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বিপাকে পড়ে।’

‘সরকারের মন্ত্রিরা লকডাউন বললেও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এটি লকডাউন নয়, কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। লকডাউন নিয়ে সরকারের মধ্যে দুই রকম বক্তব্যে চরম সমন্বয়হীনতারই প্রমাণ মেলে। সরকারের কোন বক্তব্যকে জনগণ বিশ্বাস করবে? সরকারের এই দ্বিধাগ্রস্ত সিদ্ধান্ত ও সমন্বয়হীনতায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও দ্বিধাগ্রস্ত, যার ফলে মাঠ পর্যায়ে লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা যেটিই বলা হোক না কেন তা কার্যকর হচ্ছে না। কার্যকর করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই।’

বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘অপরিকল্পিত ও প্রস্তুতিহীন এসকল পদক্ষেপে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শ্রমিক-কর্মচারী সকলেই ক্ষুব্ধ এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার, দোকান কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ। এ বিক্ষোভ প্রশমিত করতে সরকার আলাপ-আলোচনার পরিবর্তে দমন-নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। একদিকে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা, অন্যদিকে আয়-রোজগারের অনিশ্চয়তায় দমন-নিপীড়নের মুখে ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৭এপ্রিল/বিইউ/এমআর)