চারগুণ ভাড়া দিয়ে যেভাবে ঢাকায় পৌঁছলাম!

জিয়া হক
 | প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১৯:২৪

মাদারীপুরের শিবচরের চান্দেরচর বাজার। মঙ্গলবার বিকালে খোঁজ নিলাম ঢাকায় যেতে পারবো কি-না। সিএনজি-অটোরিকশা চলে। দুজন চালক বললেন পদ্মায় লঞ্চ চলে। চলে ট্রলারও। (যদিও লঞ্চ চলে না)। তবু ভরসা পেলাম। ট্রলার তো চলে।

বুধবার সকাল ১০টায় বের হলাম। সিএনজিযোগে কাঁঠালবাড়ি ঘাট। ১০০ টাকা ভাড়া দিলাম। নরমাল ভাড়া ৬০ টাকা। ঘাট থেকে কিছুই চলে না নদী পারাপারের। না লঞ্চ না ট্রলার। ফেরি চলে সীমিত। তবে সঠিক টাইম জানতে পারিনি।

ঘাট থেকে অটোরিকশায় একটু সামনে এলাম। নির্মাণাধীন পদ্মা ব্রিজের জাজিরা পয়েন্টের কাছাকাছি ৬০ টাকায়। ভাড়া হওয়ার কথা ১৫ থেকে ২০ টাকা। তা-ও অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে। দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে।

এখন পদ্মা পার হবো, সে সুযোগও নেই। এখানেও লঞ্চ নেই। নেই ট্রলারও। যদিও শত শত যাত্রী অপেক্ষা করছে। পদ্মা পার হতে লঞ্চ ভাড়া ৩৫ টাকা। ট্রলারে নিলো ২০০ টাকা। ট্রলারে উঠতে অবর্ণনীয় কষ্ট। নানান লোকের বাধা। বাধা সেনাবাহিনীরও। যদিও তাদের দেখিনি এখনো।

ট্রলার ছাড়ার আগেই ভাড়া। অনেকে প্রতিবাদ করলো ২০০ টাকা কেন? চালক বললেন, আমি ৩৫-৪০ পারসেন্টও পাবো না। সি-বোর্টে যান ৫০০ টাকা নেবে, দাবি চালকের।

ট্রলার ছাড়ার সময় সেনাবাহিনীর দুজন সদস্য দূর থেকে বাধা দিলেন। তারপরও চালক ট্রলার ছাড়লেন। বুঝলাম না, সবই চলছে তারপরও কেন এত ভোগান্তি, সবার প্রশ্ন।

মাওয়া ঘাটে নামলাম। আমি ক্লান্ত প্রাণ এক! প্রচণ্ড রোদে ঘেমে গেছি আগেই। সিএনজিতে উঠলাম, ২০০ টাকায় কদমতলী। নরমাল বাস ভাড়া গুলিস্তান পর্যন্ত ৭০ টাকা। তা-ও প্রায় যুদ্ধ করে সিএনজি পেয়েছি। যাত্রী সংখ্যা পাঁচ! তিল ঠাঁই আর নাহি রে!

পথে পথে ভোগান্তির শেষ নেই। মেইন সড়ক না হয়ে সিএনজি চললো গ্রামের ভেতর দিয়ে অনেকটা পথ। সেখানেই বেশি বিড়ম্বনা। অনেকে সিএনজি থামায়। নানা প্রশ্ন করে। কোনো কোনো সিএনজি বিনা বাধায়ও এসেছে।

কদমতলি থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পার হলাম ১০ টাকায়। ভাড়া বাড়েনি। তবে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে। প্রচণ্ড রোদ। যাত্রীদের ভিড়। তবুও কোনো রিকশা, ভ্যান বা সিএনজি আসতে চায় না। বলে, ওপারে যাওয়া বারণ! যদিও বাবুবাজার ব্রিজে জ্যাম।

বাবুবাজার ব্রিজ থেকে বকশিবাজার। রিকশা ভাড়া ৬০ টাকা সর্বোচ্চ। ৫০ টাকায় কয়েকবার আসছি আগে। গতকাল দিলাম ১০০ টাকা।

ভাড়ার কথা হিসাব দিতে পারলাম। ভোগান্তির হিসাব তো অজানা! অব্যক্ত।

আমরা কিছু হলেই কর্তৃপক্ষকে গালি দিই। কী করবে কর্তৃপক্ষ? মোটামুটি ৩০ ভাগ লোকের মুখে মাস্ক দেখলাম। সামাজিক দূরত্ব কমই বোঝেন তারা। মনে হলো, সামাজিকতাই আসল প্রেম এখানে।

লেখক: সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :