প্রযুক্তি খাতকেও জরুরি পরিষেবা হিসেবে বিবেচনার তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৩৭

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকারঘোষিত লকডাউন পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘জরুরি সেবাখাত’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে তাগিদ দিয়েছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

সম্প্রতি এ বিষয়ে বিস্তারিত পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠিও দেয়া হয়। এতে ‘সফটওয়্যার, আইটি পরিষেবা ও আইটি আউটসোর্সিং’ প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরি সেবা হিসেবে বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।

দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা খাতের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এই তাগিদ দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ই-সার্ভিস শাখা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর শনিবার ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগও আমাদের আবেদন ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। শিগগির সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে জরুরি খাত হিসেবে ‘সফটওয়্যার, আইটি পরিষেবা ও আইটি আউটসোর্সিং’ প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করবে বলে আশা করছি।

আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য ‘কঠোর লকডাউনের’ মধ্যে জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে বলে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

এর আগে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। গত বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।

গত রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ১১ দফা নিষেধাজ্ঞায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সুযোগ দেয়া হয়।

বেসিস থেকে যোগাযোগের পর গত ৪ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রজ্ঞাপনে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে যে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে তাতে সফটওয়্যার ও সফটওয়্যার পরিষেবা (আইটিইএস) এবং আইটি আউটসোর্সিং খাতকে জরুরি সেবাখাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে সফটওয়্যার, আইটিইএস এবং আইটি আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত কোম্পানিগুলো খোলা রাখা সম্ভব হবে না। এতে করে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অনলাইনে প্রদত্ত জরুরি নাগরিক সেবাগুলো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং জনসাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়বে।

এছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা রপ্তানী তথা আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত, তাদের যেহেতু দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দিতে হয়, তাদের সেবা দেয়ার কাজ বিঘ্নিত হবে। এতে একদিকে যেমন রপ্তানি আয় আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। ফলে সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা রপ্তানী তথা আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য লকডাউনের বাধ্যবাধকতা সামগ্রিকভাবে আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এ অবস্থায় সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা রপ্তানী তথা আউটসোর্সিং কাজে নিয়োজিত বেসিসের সহস্রাধিক কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্ক্রমকে সচল রাখার স্বার্থে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারীকৃত পত্রের (খ) অনুক্রমিকে ‘সফটওয়্যার, আইটি পরিষেবা ও আইটি আউটসোর্সিং’ শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।

(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/কেএম/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা