সালথার এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মেলেনি

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৪৯

ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল বিকালে ফুকরা বাজারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হীরামনির গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজনকে পেটানোর অভিযোগ উঠে নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের গুজব ছড়িয়ে ওই দিন রাতে উপজেলার কয়েকটি সরকারি দপ্তরে তাণ্ডব চালায় স্থানীয় উত্তেজিত জনতা। তবে এসিল্যান্ডের গাড়ি থেকে কাউকে কোনো মারধরের সত্যতা পায়নি জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি। রবিবার জেলা প্রশাসকের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার সাংবাদিকদের বলেন, তাণ্ডবের ঘটনায় এসিল্যান্ডের ভূমিকার বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখেছে তদন্ত কমিটি। তাকে অনেক জেরা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ওই তদন্ত কমিটির পাশাপাশি প্রশাসনিক একটি তদন্ত কমিটিও এসিল্যান্ডের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করেছেন। সে কমিটিতে আন্তর্জাতিক মানের একটি এনজিওর একজন প্রতিনিধিও ছিলেন। সেই প্রতিবেদনেও এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তাণ্ডবের ঘটনায় ক্ষতির পরিমাপের জন্য আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই প্রতিবেদনে মোট দুই কোটি ৩৬ লাখ ৯৮ হাজার ৫৩৮ টাকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন।

সে দিনের তাণ্ডবে ভূমি অফিসের ক্ষতি হয়েছে ২৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩০ টাকা, ইউএনওর কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ৫ লাখ ২৬ হাজার ১২৯ টাকা, ইউএনওর বাসার ক্ষতি হয়েছে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬০৯ টাকার, কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষতি হযেছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৮ টাকা, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৪০ টাকা, বন অফিসের ক্ষতি হয়েছে ২৫ হাজার ৮৬৬ টাকা, পিআইও এবং গোডাউনের ক্ষতি হয়েছে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫৭ টাকা, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার ক্ষতি হয়েছে ৮০ হাজার ৯২৩ টাকা, কার্যালয়ে ক্ষতি হয়েছে ৭ হাজার ৯৩৩ টাকা, ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ৩২ জাহার ৭৩২ টাকা, সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ২৩ হাজার ৭৯৯ টাকা। উপজেলা ডিজিটাল সেন্টারের ক্ষতি হয়েছে ৫২ হাজার ১০৫ টাকা, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৩২ টাকা, যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের ক্ষতি হযেছে ১৫ হাজার ৮৬৬ টাকা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে ৭ হাজার ৯৩৩, পুরোনো ভূমি অফিসের ক্ষতি হয়েছে ১৫ হাজার ৮৬৬ টাকা, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৮৯৩ টাকা, পুকুরঘাটের ক্ষতি হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। এসিল্যান্ডের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইউএনওর পাজেরো গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৯৯ লাখ টাকা। চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ও ভেঙে ফেলায় ক্ষতি হয়েছে তিন লাখ ২০ হাজার ৫০০ টাকা এবং বৈদ্যুতিক কাজের ক্ষতি হয়েছে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩১ টাকা।

প্রসঙ্গত, লকডাউনকে কেন্দ্র গুজব ছড়িয়ে গত ৫ এপ্রিল সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে তাণ্ডব চালায় উত্তেজিত জনতা। এ সময় দুটি সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় তারা। তাণ্ডবের ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।

(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :