গাইবান্ধায় ব্যবসায়ী হত্যা: অবশেষে মামলা, আসামি রিমান্ডে

প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০২১, ২০:৫৬

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

অবশেষে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার একদিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। মামলায় মাসুদ রানা ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামি রুমেন ও বাবু পলাতক থাকলেও প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে চারদিনের রিমাণ্ডে নিয়েছে পুলিশ। 

রবিবার রাতে সদর থানায় মামলা হলেও বিষয়টি সোমবার বিকালে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) তৈহিদুল ইসলাম।

এসপি জানান, হাসান আলীর স্ত্রীর দেয়া লিখিত এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক, অপারেশন) সেরাজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার প্রধান আসামিকে চারদিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার পলাতক আসামি রুমেন ও বাবুকে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সেরাজুল ইসলাম জানান, রবিবার বিকালে মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানাকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক চারদিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করাসহ পলাতক আসামি রুমেন ও বাবুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে জেলার ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। ঘটনার বিচার ও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের কঠোর শাস্তির দাবিতে সোমবারও দিনভর শহরের বিভিন্ন জায়গায় খন্ড খন্ড মিছিল করেছেন তারা।

অন্যদিকে গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের আয়োজনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ব্যবসায়ীরা। এতে নিহতের স্বজন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়।

মানববন্ধন শেষে জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করে আন্দোলনকারীরা একটি স্মারকলিপি দেন। এ সময় পুলিশ সুপার তৈহিদুল ইসলাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক আলোচনায় বলেন, সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমানসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়াসহ হাসান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার দুপুরে (১০ মার্চ) সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের (খানকাহ শরীফ) এলাকার বাড়ি থেকে হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। মাসুদ রানা সদর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। গত ৫ মার্চ হাসান আলীকে অপহরণ করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখেন মাসুদ রানা।

পরে গত ১৫ মার্চ পরিবারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ হাসান আলীকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু পুলিশ মাসুদ রানার পক্ষে প্রভাবিত হয়ে আবারও তার জিম্মায় হাসান আলীকে তুলে দেয়।   

(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/কেএম)