ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান

প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৩৩ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পাকিস্তানে তেহরিক-ই লাব্বাইক পার্টির একজন শীর্ষ নেতার আটককে কেন্দ্র করে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।  গতকাল সোমবার বিকেল থেকে এ বিক্ষোভে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন পুলিশসহ অনেকে।

 পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, ফ্রান্সে ইসলামবিরোধী ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের ঘটনার জেরে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবি জানান আল্লামা রিজভি। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দলটির নেতাকর্মীরা আল্লামা সাদ হুসেইন রিজভির আটকের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের দক্ষিণপন্থি টিএলপি নেতা দাবি করেছিলেন, শার্লি এব্দোতে মহানবি(সাঃ)-র কার্টুন প্রকাশ করার জন্য ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করতে হবে।  পাকিস্তান সরকার তাকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।  এই দাবি নিয়ে সোচ্চার হতেই রিজভিকে গ্রেপ্তার করে সরকার। তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ।

রিজভির গ্রেপ্তারের পর লাহোর, করাচি, ইসলামাবাদে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তার দলের কর্মী-সমর্থকরা। রিজভির সমর্থকদের দেখা যায়, লাঠি হাতে তারা রাস্তায় নেমে পড়েছেন। অনেক জায়গায় তারা রাস্তা অবরোধ করেন। তারপর শুরু হয় টিএলপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

পাকিস্তানের ডনের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের ফলে লাহোরের অধিকাংশ প্রধান সড়ক বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ইসলামাবাদ ও করাচিতেও যান চলাচল সীমিত রয়েছে। পাকিস্তানের ট্রাফিক পুলিশ জন সাধারণকে অপ্রয়োজনে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

টিএলপি-র সমর্থকদের দাবি, পাকিস্তানে ধর্মনিন্দা আইনত অপরাধ। শার্লি এব্দো মহানবি(সাঃ) কার্টুন ছাপিয়ে অপরাধ করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এনিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাই ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না। তাদের নেতাকে মুক্তি দিতে হবে।

 টিএলপি জানিয়েছে, ২০ এপ্রিলের মধ্যে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার না করলে বিক্ষোভ চলবে। সরকার বলছে, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ২০ এপ্রিলের মধ্যে পার্লামেন্টে আলোচনা হবে। সরকারের কথা মানতে রাজি নয় টিএলপি।

 ফ্রান্সে গত বছর ইসলামবিরোধী ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের পর থেকে বিক্ষোভ করে আসছে টিএলপি। ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠানো ও দেশটি থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে দলটি।

গত ১৬ নভেম্বর টিএলপির সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের চুক্তি হয়। তাদের দাবি নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য তিন মাস সময় নেয় সরকার। তবে ১৬ ফেব্রুয়ারি চুক্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে সরকার জানায়, এ মুহূর্তে টিএলপির দাবি মানা সম্ভব নয়, এবং এর জন্য আরও সময় দরকার। ফলে টিএলপি তাদের দাবি মানার জন্য আরও আড়াই মাস সময় দেয় সরকারকে। চলতি মাসের ২০ তারিখ এ সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা।

গত রোববার সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ভিডিওবার্তা দেন আল্লামা রিজভি। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে টিএলপি কর্মীদের লংমার্চের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন তিনি। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে সরকার।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/কেআই)