করোনায় আক্রান্ত সচিবদের জেলায় মনিটরিং হচ্ছে যেভাবে

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৩৪ | প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১৩:১৬

মহামারি করোনার সংক্রমণ বাড়ায় দেশজুড়ে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। করোনার এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে সারাদেশে চিকিৎসা কার‌্যক্রমসহ সার্বিক বিষয় দেখভালের জন্য চলতি মাসের শুরুতে দায়িত্ব দেয়া হয় সরকারের সচিবদের। তবে ৬৪ জেলায় দায়িত্ব পাওয়া ৬৪ জন সচিবের মধ্যে পাঁচজন বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত। যাদের কেউ হাসপাতালে কেউ আবার বাসায় আইসোলেশনে আছেন।

প্রশ্ন উঠেছে এমন অবস্থায় কিভাবে হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত সচিবদের জেলায় করোনার স্বাস্থ্যসেবার তদারকি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত সচিবদের মধ্যে সবাই শারীরিকভাবে ভালো আছেন। ফলে স্বশরীরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ না হলেও ভার্চুয়াললি প্রতিনিয়ত তথ্য আদানপ্রদান হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে বর্তমানে করোনায় আক্রন্ত আছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ও স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর। তার স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত।

যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন করোনা আক্রান্ত হলেও ইতোমধ্যে তার নেগেটিভ এসেছে। বর্তমানে তিনি অফিস করছেন।

আক্রান্তদের মধ্যে পূর্ত সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা গোপালগঞ্জ, খাদ্য সচিবের চুয়াডাঙ্গা, স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিবের ঢাকা জেলা, পাট ও বস্ত্র সচিবের কিশোরগঞ্জ এবং তথ্য ও সম্প্রচার সচিবের নড়াইল জেলা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার‌্যালয় থেকে দেয়া আদেশে অবসর বা বদলির কারণে জ্যেষ্ঠ সচিব বা সচিবের দপ্তর পরিবর্তন বা পদ শূন্য হলে সেখানে নিযুক্ত সিনিয়র সচিব বা সচিব দায়িত্ব পালন করবেন সেটা বলা আছে। তবে সচিবদের অসুস্থতাজনিত বা অন্য কারণে তদারকি কোনভাবে চলবে তা বলা হয়নি।

নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব স্যার করোনায় আক্রান্ত হলেও তার তদারকিতে কোনো সমস্যা হয়নি। নিয়মিত আমি এবং সিভিল সার্জন তাকে তথ্য দিয়েছি, তিনিও পরামর্শ দিয়েছেন। তার শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তা দেখেছি। ফলে তদারকিতে কোনো সমস্যা হয়নি।’

করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম পর্যায়ে গতবছরও ৬৪ জেলায় ৬৪ সচিবকে এমন দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তখন সরকারের ত্রাণ বিতরণের বিষয়টি সমন্বয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হলেও এবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব বা সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথভা দপ্তর সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবে।

দায়িত্বপ্রাপ্তরা জেলার সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন করে কোডিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন করবেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ বা অন্য বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দফতর বা সংস্থাকে লিখিত আকারে জানাবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিয়মিত অবহিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

পূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ঢাকাটাইমসকে বলেন, সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে। কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলেও তা দিচ্ছেন। ফলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

নিজে অসুস্থ থাকার কারণে যাতে তদারকিতে কোনো ত্রুটি না হয় সেজন্য পূর্ত সচিব এই জেলার খোঁজ রাখতে আরো তিনজন কর্মকর্তাকে যুক্ত করেছেন বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

জানা গেছে, খাদ্য সচিব করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গত ৪ এপ্রিল। গত ১ এপ্রিল রাত থেকে শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়া সচিব মো. আব্দুল মান্নানের। পরে তার করোনা শনাক্ত হয়।

গত ৪ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানম। বর্তমানে তিনি বাসায় আইসোলেশনে আছেন। জানতে চাইলে তার একান্ত সচিব (উপসচিব) মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি বর্তমানে ভালো আছেন। স্বাভাবিক আছেন। বাসা থেকে আজও অনলাইনে একটি মিটিংয়ে অংশ নেন তিনি।’

গত ১ এপ্রিল রাত থেকে শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়া সচিব মো. আব্দুল মান্নানের। এরপর করোনা শনাক্ত হয় তার। পরে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এখন তিনি বাসায় আইসোলেশনে আছেন।

মার্চের শেষের দিকে করোনায় আক্রান্ত হন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া। পূর্ত সচিবও মার্চের শেষের দিকে করোনায় আক্রান্ত হন। আর চলতি মাসের শুরুর দিকে করোনা আক্রান্ত হন স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব।

তবে আক্রান্ত সচিবরা সবাই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/বিইউ/কেআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

চার অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির নিন্দা 

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে স্থানান্তর করা হবে

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই পরাজিত হয়েছে: মজনু

বোনের পর চলে গেল শিশু তাওহিদও, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের লিডারসহ ২০ সদস্য আটক, অস্ত্র উদ্ধার

‘আর সহ্য করতে পারছি না’ বলেই সাত তলা থেকে লাফিয়ে তরুণের মৃত্যু

এনএসআই’র নতুন পরিচালক সালেহ মোহাম্মদ তানভীর

বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য ১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনবে ভারত সরকার

যারা আমার মায়ের হাতে খাবার খেত, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে: প্রধানমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :