আপনি কর্মের মাঝেই বেঁচে থাকবেন

জেসমিন সুলতানা
 | প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩৫

চলেই গেলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার,সাবেক আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আমাদের প্রিয় আব্দুল মতিন খসরু স্যার।

ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। এবার হঠাৎ করেই আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন নির্বাচন করবেন। মনে হলো এ করোনা সময়ে আপনি দাড়াঁবেন। দল আপনাকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দিলো। আপনি আমাদের ডেকে নিয়ে বললেন বোন আমাকে পাস করিয়ে আনতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা চাই। স্যার, আপনার ছোট ভাই বোনেরা সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনার গলায় জয়ের মালা পরিয়ে দিল। আপনিও একদিন মানববন্ধনে উপস্থিত হলেন। হাটতে কষ্ট হতো তারপরও সব কষ্টই করেছেন।

এবারের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে আপনিসহ আপনার প্রায় শতাধিক ভাই, বোন,বোনের স্বামী, ভাইদের স্ত্রী, সন্তানেরা আজ করোনায় আক্রান্ত।

অ্যাড আজহার উল্লাহ ভাই করোনার সাথে যুদ্ধ করছেন। আপনার ভাইবোনেরা অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আইসিইউতে কাটিয়ে অর্ধমৃত হয়ে ঘরে ফিরেছে।

অনেকে কাউকে না জানিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে একটু শক্তি সঞ্চয় করে দাঁড়িয়েছে। আপনাকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না স্যার। আপনার খুব শখ ছিল আপনি শেরে বাংলা এ,কে ফজলুল হকের মতোই বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সভাপতি হবেন।

প্রজেকশন মিটিং এর কথাগুলো এখনও কানে বাজে, আপনার আমাকে হ্যাট্রিক করাইয়েন না। স্যার আমরা কথা রেখেছি। দলমত নির্বিশেষে সবাই আপনাকে ভালবেসে সভাপতি বানিয়েছে। কিন্তু চেয়ারে বসাতে পারিনি স্যার। ঐ চেয়ারটিতে আপনাকেও শেরে বাংলা এ,কে ফজলুল হকের মতোই মানাতো।

আপনার দুঃসংবাদ আমাকে দিলেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।

যিনি কুমিল্লা জেলা জজ থাকাকালীন আপনি আইনমন্ত্রী। আমরা তো আপনার সততা দেখেছি। তিনি বললেন কোনোদিন কোনো বিষয়ে উনি কখনোই কোনো অনুরোধ করেননি।

কোনো কাজ করে দেয়ার জন্য এমন ভালো, সৎ একজন মানুষ ছিলেন আপনি। আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। মিটিং, সেমিনার হলে দেখেছি আজানের সাথে সাথে আপনি মসজিদে ছুটে গিয়েছেন। করোনার সাথে প্রায় ২৫ দিন যুদ্ধ করেছেন এ যে কি কষ্ট আমার মায়ের কাছে থেকে দেখেছি।

আমরা আজ অভিভাবক শূন্য। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বারে এখন আসুক তা আমরা চাই না। আমরা নাদান, আমরা বেপরোয়া,আমাদের শিক্ষা হয় না। আমরা এখনো মিটিং মিছিল করি।চলে গেলে কেউ খবর নেবে না। মরে গেলে আপনার পরিবারের ক্ষতি হবে,কারো কিছুই হবে না।

সংযত হোন,নিয়ম বিধি মেনে চলুন। যে চলে গেছে তাকে ফিরে পাব না, তিনি তার কর্মের মাঝেই বেঁচে থাকবেন। এনেক্স কোর্ট বিল্ডিং,এনেক্স বার এসোসিয়েশন বিল্ডিং, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা বারে আপনার অবদান রয়েছে। আইনজীবী সমাজ আপনাকে চিরদিন মনের মনিকোঠায় চির জাগরুক রাখবে।

ইহলোকে কেমন শান্তিতে ছিলেন জানি না। পরলোকে আল্লাহ আপনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করুন। আমিন।

লেখক: আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :