শেরপুরে লাখো নারীকে আলোর পথ দেখাচ্ছে ‘তথ্য আপা’

প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২১, ২০:৩৪

সুজন সেন, শেরপুর

শেরপুরের পাঁচ উপজেলার গ্রামীণ মহিলাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বাল্যবিবাহ, ফতোয়া, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, আইনগত সমস্যা এবং ডিজিটাল নানা সেবা দিয়ে লাখো নারীকে আলোর পথ দেখাচ্ছে ‘তথ্য আপা’। শুধু তাই না করোনাকালে দুস্থ ও অসহায় মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কাজও করেন তথ্য আপা প্রকল্পে কর্মরত কর্মীরা।

উপকারভোগীরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিস্তারের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে সমাজে জেন্ডার বৈষম্যের অন্তরায় দূর করার এটি সরকারের একটি অনন্য উদ্যোগ।

জাতীয় মহিলা সংস্থা জেলা শাখা কার্যালয়, তথ্য আপা প্রকল্প কার্যালয় এবং অন্যান্য একাধিক সূত্র জানায়, ‘শেখ হাসিনার বারতা নারী-পুরুষ সমতা’ ‘নারী-পুরুষ সমতায় তথ্য আপা পথ দেখায়’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি (২য় পর্যায়) শেরপুর সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নকলায় চলমান রয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জাতীয় মহিলা সংস্থা।

প্রকল্পটি একযোগে ৮টি বিভাগের ৬৪ জেলার ৪৯০টি উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ওইসব উপজেলার প্রত্যেকটিতে প্রকল্পের আওতায় একটি করে তথ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে একজন তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও দুইজন তথ্যসেবা সহকারী তথ্য সেবা প্রদানের কাজে নিয়োজিত আছেন। এরাই প্রকল্প এলাকায় ‘তথ্য আপা’ হিসাবে পরিচিত। সরকার কর্তৃক গৃহীত রূপকল্প-২০২১, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০) এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায় নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। দেশের গ্রামের অসহায়, দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত কিংবা কম সুবিধাপ্রাপ্ত নারীর তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং তাদেরকে তথ্য প্রযুক্তির সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করেছে। এ লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন শীর্ষক প্রকল্পটি গৃহীত হয়। প্রকল্পটি ১ম পর্যায়ে ১৩টি উপজেলায় সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ৪৯০টি উপজেলায় তৃণমূল নারীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী (এপ্রিল ২০১৭ থেকে মার্চ ২০২২ পর্যন্ত) ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পটি বাস্তবায় করা হচ্ছে।

প্রকল্পের মোট জনবল ১৯৭৮ জন। ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে ১৮ জন এবং ৪৯০টি তথ্যকেন্দ্রে ১৯৬০ জন কর্মরত আছেন। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচশ চুয়াল্লিশ কোটি নব্বই লক্ষ চুয়াত্তর হাজার টাকা।

উপকারভোগী সদর উপজেলার জঙ্গলদী গ্রামের রৌশনারা, কুমরী কাটাজান গ্রামের পারভীন ও চান্দেরনগর গ্রামের মনোহার বলেন, তথ্যকেন্দ্রে কর্মরত তথ্য আপা’রা উঠান বৈঠকে উপস্থিত গ্রামীণ মহিলাদের ইন্টারনেটের বাস্তব ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কষি কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সরকারি আইটি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন বিষয়ে রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুক্ত আলোচনা করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/এলএ)