মানবসদৃশ রোবট বানালো ইডিইউর পাঁচ শিক্ষার্থী

প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২১, ২১:৪২ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১, ২৩:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বর্তমান যুগ হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিক্সের। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে চলছেন এই ক্ষেত্র দুটির উন্নয়নে। নানান সীমাবদ্ধতার কারণে উন্নত বিশ্বের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ পিছিয়ে। এরই মাঝে চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) পাঁচ শিক্ষার্থী গড়ে তুললেন নিজেদের রোবট। এক বছরের প্রচেষ্টায় ‘রোবো ইডিইউ ২.০’ নামে মানবসদৃশ এক রোবট তৈরি করেছে ইডিইউর ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফাইনাল সেমিস্টারে পাঠরত একটি দল।

রোবো ইডিইউর বিশেষত্ব হলো এটি মৌখিক নির্দেশনা শুনে চলাফেরা ও স্যালুট করতে পারে, পরিচয় জানতে চাওয়া হলে নিজের সম্পর্কে বলতে পারে এবং সামনে দাঁড়ানো মানুষের মুখ দেখে তাকে চিনতে ও পরিচয় বলতে পারে (ফেইস রিকগনিশন), সেক্ষেত্রে মানুষটির পরিচয় ও ছবি রোবটের ডাটাবেইজে আগে থেকেই সংরক্ষিত থাকতে হয়।

দলনেতা মাঈনুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আরো আগে থেকেই আমাদের ফাইনাল সেমিস্টারের প্রজেক্ট হিসেবে একটি রোবট গড়ে তোলার কাজ শুরু করি। রোবটটি ফেস রিকগনিশন, মুভমেন্ট, ডাটা এনালাইসি এবং সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু কর্মকাণ্ড সাবলীলভাবে করতে সক্ষম আমাদের রোবো ইডিইউ। এর প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ হিসেবে পাইথন ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একইসাথে ওয়াইফাই ও ব্লুটুথ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রোবটটির প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত কাজগুলো শেষ, বর্তমানে আমরা এর বাহ্যিক অংশ পরিবর্ধনের মাধ্যমে আরো মানবসদৃশ করে তুলতে কাজ করছি।

নির্মাতা দলের অন্য সদস্যরা হলেন নাইমুল আলম, জাহেদুল ইসলাম, আকরামুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম।

দলটির তত্ত্বাবধানে থাকা প্রভাষক বাকি বিল্লাহ জানান, রোবটটিকে এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে এটি ইডিইউর ফিউচার ফ্যাক্টরিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স লার্নিং টুল হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে শিক্ষর্থীরা এআই রোবট নিয়ে উত্তরোত্তর গবেষণা ও তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত আইডিয়াগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।

ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস-চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল। এসব ক্ষেত্রে পড়ালেখা, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উৎসাহ দিয়ে আসছি আমরা। রোবোটিক্স ক্লাব গঠন ও ক্লাবটিকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান তারই অংশ। এছাড়া আমরা ২০১৯ সালে ইডিইউ ফিউচার ফ্যাক্টরি গঠন করেছি। এ প্লাটফর্মে রোবটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, স্মার্ট মেশিন, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লক চেইন, ডেটা সায়েন্স- এ ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চর্চা ও অনুশীলন করছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যত প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে ইডিইউর শিক্ষার্থীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

উল্লেখ্য, রোবটটিকে নিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছে ইডিইউ, যাতে রোবটির বিশেষত্বগুলো ও এর নির্মাণের পেছনের গল্পগুলো উঠে এসেছে। ভিডিওটি দেখা যাবে ইডিইউর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে বা https://tinyurl.com/5ebrez8h লিংকে ক্লিক করলেই।

(ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/এলএ)