হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১৩:১৬ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তেঁজগাওয়ের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন আর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে দুপুর ১২টার দিকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে আন্দোলন ও সহিংসতার ঘটনায় হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর সাত দিন পর ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীকে নিয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর তার সমর্থকদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলারও আসামি তিনি। এছাড়াও হেফাজতের এই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্তত চারটি মামলা হয়েছে৷

এর আগেও তার বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম।

এদিকে গত ৩ এপ্রিল রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকেই মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একের পর এক বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসছে। সেইদিন সোনারগাঁয়ে র‌য়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীকে নিয়ে সময় কাটাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। 

মামুনুল ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও সাংবাদিকদের প্রশ্ন ও পরে পুলিশের জেরায় তিনি যেসব তথ্য দেন, তাতে অনেক গরমিল পাওয়া যায়। রিসোর্টের সঙ্গীর নাম, তার বাবার নাম ও বাড়ির ঠিকানা নিয়ে দুই ধরনের তথ্যের পর বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকে ফাঁস হওয়া বেশ কিছু ফোনালাপ হেফাজত নেতার বিয়ের দাবির সত্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়।

ফোনালাপের একটিতে বোঝা যায়, ঘটনার পরপরই মামুনুল তার চার সন্তানের জননী স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, সেই নারী (ঝর্ণা) তার পরিচিত শহীদুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনার কারণে চাপে পড়ে ওই নারীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। এ নিয়ে যেন তার স্ত্রী ভুল না বোঝেন। পরে বাসায় এসে বুঝিয়ে বলবেন।

পরে আরেকটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যা মামুনুলের সঙ্গে তার রিসোর্টের সঙ্গীনির মধ্যকার বলে প্রতীয়মান হয়। সেখানে ওই নারী জানান, তিনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার মায়ের একটি বন্ধ মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। আর অন্য একজন যখন তাকে কোথায় বিয়ে হয়েছে জিজ্ঞেস করেছেন, তখন তিনি বলেছেন, এটা জানেন না। মামুনুলের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।

আরও একটি কথোপকথনে বোঝা যায়, মামুনুলের বোন কথা বলেছেন হেফাজত নেতার চার সন্তানের জননী স্ত্রীর সঙ্গে। তিনি তাকে বুঝিয়েছেন, কেউ যদি তাকে ফোন করে, তাহলে তিনি যেন বলেন, তিনি এই দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন এবং তার শাশুড়ি এই বিয়ের আয়োজন করেছেন।

এদিকে মামুনুল হকের কথিত তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামে এক নারীর নাম আসে গণমাদ্যমে। তাদের বাড়ি গাজীপুরর কাপাসিয়ার বানার হাওলা গ্রামে।

তবে মামুনুলের সঙ্গে কথিত বিয়ের বিষয়ে কিছু জানেন না লিপির চাচা হিরন মিয়া।

তবে তৃতীয় স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির বাড়ি গাজীপুরর কাপাসিয়ার বানার হাওলা গ্রামে গিয়ে স্বজন আর প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও মেলেনি বিস্তারিত কোনো তথ্য।

 

ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/এসএস/এমআর