ইবাদতে বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ মামুনুলের

প্রকাশ | ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১৫:২৭ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১৬:১৫

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

গ্রেপ্তারের পর রাতে ইবাদতের অনুপযুক্ত জায়গায় তাকে রাখা হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় তিনি এ অভিযোগ করেন। 

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এস আই সাজেদুল হক সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে মামুনুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।  

রিমান্ড আবেদন সম্পর্কে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান বলেন, মামলার বাদী জিএ আলমগীর শাহীন ২০২০ সালের ৬ মার্চ মোহাম্মদপুরস্থ সাত গম্বুজ মসজিদে এশার নামাজ পড়তে গেলে এজাহারনামীয় ৫ জন আসামি বাদীকে ইবাদতে বাধা দেন এবং এলোপাথাড়ি মারধর করে সাত হাজার টাকা ও ২শ ইউএস ডলার নিয়ে যায়। যা এজারহারনামীয় আাসামিরা জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাফুজুল হক ও তার ভাই মামুনুল হকের নির্দেশে করেন। তাই সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। রিমান্ড আবেদনে মামুনুল হক রাজধানীর লালবাগ থানার ১২(১১)২০১৮, কুমিল্লার চান্দিনা থানার ১৬(১২)২০২০ এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার ১৪(৪)২০২১ মামলার আসামি বলে উল্লেখ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুর ও জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। 

অন্যদিকে আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে আসামি পক্ষে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে হেফাজতে ইসলামকে সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করাই এ মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

এরপর লোহার খাঁচার কাঠগড়ায় থাকা মামুনুল হক আদালতের কাছ থেকে কথা বলার অনুমতি নিয়ে বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাকে রাতে ইবাদতের অনুপযুক্ত জায়গায় রাখা হয়। তিনি পবিত্র রমজান মাস কুরআন তেলাওয়াত ও ইবাদতবন্দেগীর মাধ্যমে কাটান। কিন্তু রাতে এমন জায়গায় রাখা হয়েছিল সেখানে তিনি ইবাদতবন্দেগী করতে পারেননি। রিমান্ড মঞ্জুর করা হলে তার ইবাদতবন্দেগীতে বিঘ্ন ঘটবে। 

তখন বিচারক বলেন, আপনার ইবাদতবন্দেগিতে যাতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
 
আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করার পর আইনজীবী মেজবাহ রিমান্ডকালীন সময়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ দেয়ার অনুমতি চান। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এরপর বেলা পৌনে ১২টার দিকে মামুনুল হককে আদালত থেকে বের করে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। 

এদিকে রিমান্ড শুনানিকালে আদালত কক্ষে কোনো সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারেনি। শুধু আসামিপক্ষের দুইজন আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন প্রসিকিউটর আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে গত রবিবার বেলা ১টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। 
গ্রেপ্তারের পর তাকে মোহাম্মদপুর কলেজ রোডের তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায়। 

এ বিষয়ে নিজ কার্যালয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় একটি নাশকতা মামলা হয়। মামলা তদন্তে ওই ঘটনায় সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে (মামুনুল হক) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া হেফাজতের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, ভাঙচুরসহ অনেক মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/কেআর)