করোনা ঠেকাতে দুই মাস্ক পরার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
এতদিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গবেষকরা একটি মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। এবার তারাই বলছেন একটি নয়, দুইটি মাস্ক পরুন। একটি সমীক্ষার পর এমনটাই জানিয়েছেন নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
মেডিক্যাল জার্নাল ‘জেএএমএ’—তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুইটি মাস্কের মধ্যে যে শূন্যস্থান থাকে, তা ভাইরাসকে আটকানোর ক্ষেত্রে সহায়ক।
এছাড়াও মাস্ক অনেক সময়ই তা ঠিক মতো ফিটিংস হয় না। দুইটি মাস্ক ব্যবহার করলে, সেই ঝুঁকিও অনেকটা কমতে পারে। প্রতিবেদনের প্রধান লেখক তথা ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনার সংক্রামক রোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এমিলি সিকবার্ট বেনেট বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য যে মাস্কগুলো তৈরি করা হয়, সেগুলির ফিল্টার যথেষ্ট ভাল। তবে, সেগুলো যেভাবে তৈরি হয়, তাতে মুখে ভাল করে ফিটিংস হয় না।
ফিটেড ফিল্টারেশন ইফিসিয়েন্সি পরীক্ষা করেছেন তারা। ১০ ফুট বাই ১০ ফুটের ইস্পাতের এক্সপোজার চেম্বার বা কক্ষ তৈরি করেন তারা। যাতে ছিল লবণের ক্ষুদ্র ভাসমান কণা। সেই ইস্পাত কক্ষের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের মাস্ক কম্বিনেশন তৈরি করে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। দেখা হয়েছে, শ্বাস গ্রহণের স্থান থেকে কত দূরে লবণের ক্ষুদ্র ভাসমান কণাগুলি আটকাচ্ছে। লবণের ক্ষুদ্র ভাসমান কণাগুলোকে বিভিন্ন গতি এবং দিক থেকে চালনা করা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পরই এই গবেষণা শুরু করেন তারা। গবেষকরা সমীক্ষা করে দেখেছেন, একই মাস্ক বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে একইরকম কার্যকর নাও হতে পারে। কারণ মাস্কের কার্যকারিতা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট মানুষের মুখের আকার, আয়তন এবং মাস্কের কতটা অংশ সঠিকভাবে ফিট করছে তার ওপর।
একটি মাস্ক করোনা ভাইরাসকে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আটকাতে পারে। তবে কাপড়ের মাস্ক হলে, তা ৪০ শতাংশের বেশি হয় না। কাপড়ের মাস্কের ওপর সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করলে কার্যকারিতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কাপড়ের মাস্কটি খুব ভাল ফিটিংস হলে, নাক—মুখের সঙ্গে সার্জিকাল মাস্কটির দূরত্ব না থাকলে এবং সবসময় প্রয়োজনীয় অংশটি ঢাকা থাকলে কার্যকারিতা আরও ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার দুইটি মাস্কই যদিও একদমই ভাল ফিটিং না হয়, তাহলে কোনও কাজই হবে না।
তাই, কথা বলার সময় সার্জিক্যাল মাস্কের ওপর একটি কাপড়ের মাস্ক ভালভাবে বেঁধে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। যাতে কথা বলার সময় ফাঁক না সৃষ্টি হয় বা জায়গা থেকে সরে না যায়। তাতে করোনা ভাইরাসকে অনেক ভালভাবে আটকানো যাবে বলে মনে করছেন নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এজেড)