আরটি-পিসিআর টেস্টের রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে?

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৫২

ডা. নুসরাত সুলতানা

করোনা ভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট কি বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ব্যবহৃত দুই-জিন আরটি-পিসিআর টেস্টের রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে? অনেকের মনে এই প্রশ্নটি ঘুরছে।

প্রথম থেকেই আমরা যে বিষয়টি জেনেছি এবং এখনো জানি তা হচ্ছে, গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড হওয়া স্বত্বেও কোভিড-১৯  সনাক্তের ক্ষেত্রে  আরটি-পিসিআর ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট দিতে পারে। এই হার আরো বাড়তে পারে যদি-

করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার ৫ দিনের মধ্যেই টেস্ট করানো হয়। ভাইরাসটির সুপ্তিকাল ২-১৪ দিন, গড়ে ৫ দিন। অর্থাৎ ৫ম দিনের আগে টেস্ট করালে টেস্ট নেগেটিভ আসতে পারে। সংস্পর্শে আসার দিন থেকে ৫ দিন পর্যন্ত আপনি আইসোলেশনে থাকবেন ও সর্বনিম্ন ৫ম দিনের দিন টেস্ট করাবেন।

নমুনা সংখ্যা বেড়ে গেলেও নমুনা সংগ্রহকারীর সংখ্যা না বাড়ায় নমুনা সংগ্রহের গুনগত মান খারাপ হয়ে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসতে পারে।

টেস্ট সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় নমুনা স্টোর করে রাখতে হয়-২০ ফ্রিজে। যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখা না যায়, তাতেও ফলস নেগেটিভিটি বাড়তে পারে।

তবে, করোনা ভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ইটের কারণে দুই-জিন আরটি-পিসিআর টেস্টের রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, আরটি-পিসিআর টেস্টের জন্য টার্গেট হিসেবে সবচেয়ে কম মিউটেশনযোগ্য জীন বাছাই করা হয়। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি শুধুমাত্র আরটি-পিসিআর পজিটিভ কেইসগুলোকেই জিনোম সিকুয়েন্সিং করা যায়। তাই নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারনে ফলস নেগেটিভ বেশি আসতে পারে, এই ভাবনাটি অমূলক।

থ্রি জিন টার্গেটের মাঝে বর্তমানে ব্যবহৃত n, orf এর সাথে রয়েছে S gene.  S gene বা স্পাইক প্রোটিন জিনে সবচেয়ে বেশি মিউটেশন হয়, তাই আরটি-পিসিআর টেস্টে এই জিনটি মিস হওয়ার সুযোগ সবচেয়ে বেশি।

কোভিড -১৯ সনাক্তে  আরটি-পিসিআর টেস্টের জন্য এখনো নতুন কোন টার্গেট বাছাই করার সময় আসেনি।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ভাইরোলজী বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/এসকেএস