যোগীতাকে দেখো এবং শেখো
১৪ চাকা ৩০ টনের হেভি কার্গো ট্রাক দেখেছেন? ছোটখাট একটা বাড়ির মতো। আর সেটা নিয়ে সমগ্র ভারত চষে বেড়ান যে নারী তিনি যোগীতা রঘুবংশী। ভারতের প্রথম এবং ওভার কোয়ালিফাইড ড্রাইভার। ওভার কোয়ালিফাইড মিনস ওভার কোয়ালিফাইড। আইনে নিয়ে পাশ করার পর কেউ যদি ওকালতি না করে ড্রাইভিং পেশায় আসে তবে আর কি বলা যায়! করেছেন বিউটিশিয়ান কোর্স, একই সাথে কমার্স গ্রাজুয়েট। অনর্গল বলতে পারেন বেশ কয়েকটা ভাষা..
জীবন একরকম যায় না। চড়াই-উৎরাই থাকবেই। এরকম একদিন সড়ক দূর্ঘটনায় স্বামী হারান তিনি। স্বামীর শেষকৃত্যানুষ্ঠানের দিন অপেক্ষা করছিলেন ভাই আসবে। ভাই আসলো লাশ হয়ে। যাত্রা পথে সড়ক দূর্ঘটনা কেড়ে নেয় তার প্রাণ। ধাক্কার পর ধাক্কা...একসাথে স্বামী আর ভাইয়ের লাশ...
কিন্তু জীবন থেমে থাকার নয়। জীবিকার তাগিদে ওকালতির চিন্তা বাদ দিয়ে ধরলেন ট্রাকের স্টিয়ারিং। ওকালতি করতে গেলে জুনিয়র হয়ে থাকতে হবে, তাতে টাকা আসবে খুব কম। ট্রাকের হুইল ধরলে আসবে নগদ টাকা। সন্তানের স্কুলের খরচ মেটানো এবং স্বাধীন জীবনের আকাঙখায় যোগীতা ভুল করেন নাই ... এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি যোগীতাকে। হাইওয়েতে চোখ রেখে সামনের এগিয়ে চলছেন তো চলছেনই...
ডেস্কজব অথবা শিক্ষকতার চাকরি না পেলে আমাদের শিক্ষিত মেয়েরা ঘরে বসে থাকবে কিন্তু চাকরি করবেনা এমন উদাহরণ ভুরিভুরি। আর এটাকে পুঁজি করে পুরুষতন্ত্র তাদের আরো চেপে ধরে। "তুমি পারবা না, তুমি মেয়ে, তোমাকে দিয়ে হবে না, মানুষ কি বলবে?"- এরকম কয়েকটা শব্দ দিয়ে আমরাও অনবরত নিরুৎসাহিত করে যাই আমাদের মেয়েদের। আত্মবিশ্বাসী মেয়েদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে ফেলাই যেন এ সমাজের লক্ষ্য। মৌলবাদীরা চায় মেয়েরা ঘরে বসে থাক, আর তথাকথিত উন্নত মস্তিষ্ক চায় মেয়েরা ডেস্কজবেই থাকুক...
ডিয়ার গার্লস এন্ড ওমেন্স, জীবন একটাই। স্বাধীনতার সুখ তুমি পাও নাই, তোমার মা পায় নাই, তার মা পায় নাই...নাউ স্ট্যান্ড আপ। যোগীতাকে দেখো, শেখো। তুমি পারবা, একটু চেষ্টা করো তুমি পারবাই। ডেস্কজবে নিজেকে আটকে রেখো না। যোগীতার মতো হাজারো মেয়ে আছে এ সমাজে। শুধু চোখ কান খোলা রাখো, ইচ্ছামতো বাঁচো....
ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/এসকেএস