মির্জাপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সাদিয়া আক্তার (১৯) নামে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। দুই হাত বাঁধা ঝুলন্ত অবস্থায় রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সাদিয়ার বাবার অভিযোগ, শ্বশুর-শাশুড়ির দাবিকৃত যৌতুকের টাকা ও ননাস জামাইয়ের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননাস ও ননাসের জামাইকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

সোমবার রাতে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের জুড়ান মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে সাদিয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে।

সাদিয়া উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের সেলিম হোসেনের মেয়ে ও বাঁশতৈল মুনসুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

পুলিশ জানায়, গত আড়াই বছর আগে আজগানা ইউনিয়নের জুড়ান মার্কেট এলাকার বাসিন্দা রফিক মিয়ার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী ছেলে ওয়াজেদ আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাস পর ওয়াজেদ আলী আবার দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যায়। এরপর থেকে সাদিয়া এক সময় বাবার বাড়ি এক সময় শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন।

মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিম বলেন, সোমবার রাতে খবর পেয়ে দুই হাত বাঁধা ঘরের ধর্ণার সঙ্গে ঝুলানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুটি রহস্যজনক বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে সাদিয়ার বাবা সেলিম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, জামাই আফ্রিকা যাওয়ার পর মেয়ের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম ও শাশুড়ি মিলে তাদের ছেলে আফ্রিকায় দোকান ভাড়া নেবে বলে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তারা সাদিয়াকে নানাভাবে অত্যাচার করতে থাকে। অন্যদিকে স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে সাদিয়ার ননাস জামাই জুয়েল সাদিয়াকে নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে সাদিয়া তার শ্বশুর-শাশুড়িকে জানালে বিষয়টি হিতেবিপরীত হয় বলে সেলিম হোসেন জানান। এরপর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি এবং ননাস রোজিনা ও তার স্বামী জুয়েল মিয়া মিলে বিভিন্ন সময় সাদিয়াকে ঘরে আটকে রেখে অত্যাচার করতেন।

গত ২ এপ্রিল সাদিয়া তার মামা মিনহাজ উদ্দিনকে ফোনে জানান, তাকে খেতে দেয়া হচ্ছে না এবং শারীরিকভাবেও অত্যাচার করা হয়েছে। যা তার মামা মিনহাজ উদ্দিন মোবাইলে রেকর্ড করে রাখেন। রবিবার সাদিয়া বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে এলে সোমবার দিনের কোন এক সময়ে তারা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। পরে খুনের অভিযোগ থেকে বাঁচতে তারা তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে সাদিয়ার বাবা অভিযোগ করেন।

তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে সাদিয়ার সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিম মিয়া বলেন, দুই হাত ওড়না দিয়ে পেচানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত মরদেহ টাঙ্গাইল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ইউডি মামলা হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা জানতে চাইলে ঘটনাটি রহস্যজনক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/এলএ)