করোনায় বেকার এক তৃতীয়াংশ কর্মজীবী নারী

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২১, ২১:৪৫ | প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল ২০২১, ২১:৪২
ফাইল ছবি

মহামারি করোনাভাইরাসের থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে করোনাকালে ক্ষতির শিকার হয়েছে কর্মজীবী নারীরা। দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কর্মজীবী নারী এই সময়ে কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এর জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। মঙ্গলবার প্রকাশিত সংস্থা দুটির জরিপ বলছে, গত বছর জুন মাসে ৩২% নারী কাজ হারিয়েছে এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নেমে এসেছে ৩১ শতাংশে।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন বলন, যারা কাজ হারিয়েছেন এবং কাজে ফিরতে পারেননি তারা মূলত কল-কারখানা, ঘর-গৃহস্থালি এবং দিনমজুরের কাজ করতেন।

ইমরান মতিন বলেন, ‘এমনিতেই দেশের শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ কম। আর কোভিড-সৃষ্ট এই অবস্থা নারীদের শ্রমবাজার থেকে আরও ছিটকে ফেলতে পারে।’

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত যৌথ গবেষণার তৃতীয় ধাপে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট দারিদ্র্যের গতিপ্রকৃতি এবং স্বল্প আয়ের মানুষদের মাঝে এর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত যেখানে শহরাঞ্চলে নতুন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৫৯ শতাংশ, সেখানে গ্রামাঞ্চলে ৪৪ শতাংশ।

জরিপে দেখা গেছে, দারিদ্রসীমার উপরে কিন্তু মধ্যম জাতীয় আয়-সীমার নিচে থাকা এই শ্রেণির মানুষদের অবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে সবচেয়ে ধীরগতিতে। গত জুনে দরিদ্র নয় কিন্তু সেই ঝুঁকিতে থাকা এই মানুষদের ৭২% দারিদ্রসীমার নিচে অবস্থান করছিল। তাদের আখ্যায়িত করা হয়েছিল ‘নতুন দরিদ্র’ হিসেবে।

সেই ‘নতুন দরিদ্র’দের ৫০% এখনো ঝুঁকিতে থাকা মানুষের তালিকায় বিদ্যমান। এই হার শহরে ৫৯% এবং গ্রামে ৪৪%। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ১৪.৮% ‘নতুন দরিদ্র’দের এই হার বিগত বছরের জুনে ছিল ২১.২%-এ।

জরিপের তথ্য বলছে, গত বছর ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ বস্তিবাসী শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যান, যাদের ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এখনো ফেরেনি। প্রাক-কোভিড সময়ের তুলনায় শহরের বস্তিবাসীর আয় কমলেও খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় গত জুনের তুলনায় এ বছরের মার্চে দ্বিগুণ হয়েছে। ভাড়া বাড়িতে থাকা অধিকাংশ শহুরে দরিদ্রের জন্য এটি নির্মম বাস্তবতা। সবার সঞ্চয় কমেছে আশ্চর্যজনকভাবে। অরক্ষিত অদরিদ্র এবং দরিদ্র নয় এমন শ্রেণির মানুষের সঞ্চয়ের পরিমাণ কোভিড-পূর্ববর্তী অবস্থার চেয়ে নিচে নেমে গেছে। একই সঙ্গে সব শ্রেণিতেই ঋণ গ্রহণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণের পর বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে সরকার। মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তারা যাতে ঘুরে দাঁড়ান সেজন্য দেয়া হয়েছে সরকারি সহায়তা। কিন্তু একেবারে তৃণমূলে যেসব নারী কর্মী রয়েছেন তারা পড়েছেন বিপাকে।

অর্থনীতিবিদ এবং গবেষকরা বলছেন সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেটা এই ব্যক্তি পর্যায়ে নারীদের জন্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সায়মা হক বিদিশা বিবিসিকে বলছেন, যেসব নারী বেকার রয়েছেন তাদের কাজে ফেরাতে তাৎক্ষণিক এবং স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :