স্মৃতিতে কবরী আপা ও একটি বিলম্বিত পোস্ট

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০২১, ১৪:১৬ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৯

আশীষ সেনগুপ্ত

২০০৪ থেকে ২০১৪-দশ বছরের ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকজন গুণী ও কিংবদন্তীর ছবি তোলার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এই সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুণীজনদের যে ছবি আমি তুলেছি, তার একটা বড় অংশের সহযোগিতায় ছিলেন প্রিয় বিনোদন সাংবাদিক অভি মঈনুদ্দীন। প্রবীণ ও কিংবদন্তী শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা, সংযোগ ও স্মৃতি সংরক্ষণে তার আন্তরিকতা আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পেয়েছি।

শ্রদ্ধেয় কবরী আপার ক্ষেত্রেও তাই। উনাকে রাজি করানো থেকে শুরু করে যাবতীয় আয়োজনে অভি মঈনুদ্দীন-এর ভুমিকাটাই ছিল বেশি। পরবর্তীতে এতে যুক্ত হয়েছিলেন তৎকালীন অবিভক্ত ‘রঙ’ ফ্যাশন হাউজের অংশীদার ও দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা (যিনি বর্তমানে ‘বিশ্বরঙ’র স্বত্বাধিকারী)। বলা যায়, তার সম্পৃক্ততায় এই ফটোসেশানটা আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

দিনটা ছিল ২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর। আমরা সকালেই হাজির হয়েছিলাম কবরী আপার গুলশানের বাড়িতে। সারাদিন ফটোসেশান চললো। দীর্ঘসময় তাঁর সান্নিধ্যে থাকার সৌভাগ্য হলো আমাদের। দুপুরে খিচুড়ি আর কয়েকপদের ভাজি দিয়ে খাওয়ালেন আমাদের। কিন্তু যে স্মৃতিটা আমার মনে আজও গেঁথে আছে-তা হলো শুঁটকি ভর্তা।

সকালেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি নাকি আমার দেশি?’ (অর্থাৎ চাটগাঁইয়া)। বললাম, ‘হ্যাঁ’। বিস্তারিত জেনে নিলেন। এরপর বললেন ‘তোমাকে শুঁটকি ভর্তা খাওয়াব’। দুপুরে খেতে বসেই শুঁটকি ভর্তার বাটিটা আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, ‘খিচুড়ির সঙ্গে!’ হো হো করে হেসে বললেন, ‘ছেলেটা বলে কী? ভাত আছে তো, ভাত দিয়ে খাও’।

এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকবারই দেখা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। ভুবনমোহিনী মিষ্টি হাসি দিয়ে জানতে চেয়েছেন আমার খবর, আমার পরিবারের মানুষগুলোর খবর। আজ তিনি নেই। রয়ে গেছে তাঁর কাজ, তাঁর স্মৃতি। যার ছোট্ট একটা অংশ আমার কাছে ...

পুনশ্চঃ কবরী আপার চলে যাওয়ার চারদিন পর এই পোস্ট দেওয়ার কারণ একটাই- ছবিগুলো এতদিন খুঁজে পাইনি।

লেখক: চিত্রগ্রাহক

ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/এসকেএস