ডায়েরিয়া রোগীদের জন্য সহানুভূতির হাত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২১, ২০:৪১ | প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০২১, ১৯:০৫

বেশ কিছুদিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় হঠাৎ ডায়েরিয়ার প্রকোপ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১০ জনের বেশি মারা গেছেন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। অন্যদিকে ডায়েরিয়ায় দিন দিন রোগী বাড়ায় এখানকার হাসপাতালে চাপ বেড়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে স্যালাইনের। ফার্মেসিতে মিলছে না স্যালাইন। কোথাও কোথাও কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করা হয় রোগীদের জরুরি প্রয়োজনীয় এই স্যালাইন।

এমন বাস্তবতায় বিভিন্ন মাধ্যমে স্যালাইন সংগ্রহ করে কেউ বিনামূল্যে, কেউ আবার ন্যায্যমূল্যে মির্জাগঞ্জে রোগীদের সরবারহ করছেন।

বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যক্তি উদ্যোগে ডায়েরিয়ার প্রকোপে দিশেহারা মানুষের হাতে স্যালাইন তুলে দেয়া হচ্ছে। করোনার মধ্যে যখন সর্বাত্মক লকডাউন চলছে তখন এসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এমন কার্যক্রম বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

এদিকে স্যালাইনের এমন স্বল্পতার কথা ইতিমধ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকেও অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পটুয়াখালীসহ অন্যান্য জেলায় আইভি ও খাবার স্যালাইন পৌঁছানোর আশ্বাস দেয়া হয়েছে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

এছাড়াও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও চাহিদার আলোকে স্যালাইন সরবারহ করা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সংকট পুরোপুরি কেটে যাওয়ার আশা করছে স্থানীয় প্রশাসন মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ফেরদৌস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আপাতত স্যালাইনের সংকট অনেকটা কেটে গেছে। সরকারি স্যালাইনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কেউ কেউ এগিয়ে এসেছেন। সাধ্যমত আমাদের হাতে স্যালাইন তুলে দিয়েছেন। আশা করি আর সমস্যা থাকবে না।’

করোনার মধ্যে ডায়েরিয়ার প্রকোপ- এই অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, করোনার কারণে লকডাউন চলছে তার মধ্যে এমন বিপদকালে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন, ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ যে এগিয়ে এসেছেন এটা পজিটিভ দিক। আমরা এদের মানবিক উদ্যোগকে সম্মান জানাই।

হাসপাতালে এই মুহূর্তে দুই হাজার পিসের বেশি স্যালাইন জমা আছে বলেও জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জানা গেছে, ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে ঢাকাস্থ মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে গত চার দিন ধরে ন্যায্যমূল্যে স্যালাইন বিক্রি করা হয়।

এছাড়াও মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্ট ওয়েব, মির্জাগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কল্যানী, মির্জাগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা, মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন কল্যাণ সমিতি, মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বরিশাল সহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্যে ও গরিব রোগীদের জন্য বিনামূল্যে স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। প্রবাসীদেরও অনেকে এগিয়ে এসেছেন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত মানুষকে সহায়তা করতে।

স্যালাইনের সংকটের সময় সুদুর যুক্তরাষ্ট্র থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হাবিব রায়ান ঢাকাটাইমসকে বলেন, দেশ থেকে অনেক দূরে থাকলেও এলাকার মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোকে কর্তব্য মনে করেছি। আমার সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন মির্জাগঞ্জেরই সন্তান দিলরুবা কলি। ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত মানুষের জন্য আমরা বিনামূল্যে এক হাজার আইভি স্যালাইন দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। এলাকার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত কুইক রেসপন্স টিমের মাধ্যমে সেগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

বিনামূল্যে স্যালাইন নিয়ে হাসপাতালে রোগীদের পাশে দাঁড়ানোদের একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম রঞ্জু। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘একমাত্র মানবিক চিন্তা থেকে এলাকার অসুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। কারণ শুরুর দিকে গোটা বরিশালেই স্যালাইনের সংকট ছিল। আমি মনে করি এমন দুর্যোগে সবসময়ই দলমত নির্বিশেষে সবাই এগিয়ে আসলে কোনো সমস্যাই সমস্যা মনে হবে না।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্টস ফোরামের সভাপতি জুয়েল রানা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সংগঠন হলেও আমাদের মতো আরো অনেকে চেষ্টা করেছেন নিজেদের অবস্থান থেকে এলাকার মানুষের পাশে থাকতে। স্যালাইন সংকটের কারণে যাতে কষ্ট পেতে না হয় সেজন্য আমরা ন্যায্যমূল্যে প্রতিদিন স্যালাইন বিক্রির ব্যবস্থা করছি। আশা করি অনেকেই উপকৃত হয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :