বাংলাদেশে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা‘র গুরুত্ব

প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৫১

রেজাউল করিম রেজা

স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো নিয়মনীতি ছিল না। হয় ব্রিটিশ, নয়তো পাকিস্তান এই দুই নীতিতেই চলেছে, কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র ১০ মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধান রচনা করে বাংলাদেশকে একটি সুন্দর শব্দ উপহার দেন, যার নাম ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’।

বাংলাদেশের মানুষ সবসময়ই ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিল। যদি আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ হতে শুরু করে আধুনিক যুগের দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো বাঙালি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসই শুধু করে না তারা ধর্মনিরপেক্ষতাকে পছন্দও করে।

সাম্প্রদায়িক চিন্তা কখনোই মানুষের সঙ্গে মানুষকে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেয় না। কেবলই মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদ সৃষ্টি করে, দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়।

একটি রাষ্ট্র যখন গঠিত হয়, তখন সেখানে নানা সম্প্রদায়ের লোক এসে ভির জমায়। এই নানা সম্প্রদায়ের ভাব-ভাষা-সংস্কৃতিও হয় নানা রকমের। আর এজন্যই পৃথিবীর প্রায় সকল রাষ্ট্রেই বর্ণিল সংস্কৃতি দেখা যায়। এই বহুবর্ণতাই রাষ্ট্রের প্রাণ। ওই বহুবর্ণতা চাই বলেই আমরা ক্রসেড কিংবা জেহাদ চাই না, আল-কায়েদা কিংবা বকোহারাম চাই না, চাই না তালেবান কিংবা আইএস-আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের মতো ভয়ঙ্কর জঙ্গী সংগঠন। ধর্মনিরপেক্ষতা এই বহুবর্ণ সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রেখে রাষ্ট্রীয় ঐক্য বা ভৌগোলিক ঐক্য টিকিয়ে রাখে।

একথাটি রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন বলেই সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ সন্নিবেশিত করেন।

আজকে যারা দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীকে বিতর্কিত করে, ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনসাধারণের জানমাল ধ্বংস করছে, তারা আর যা-ই হোক এদেশের স্বাধীনতার পক্ষের কেউ হতে পারে না। যারা ওয়াজ মাহফিলের নামে প্রকাশ্যে জাতির পিতার ভাষ্কর্য ভাঙ্গার জন্য উষ্কানিমূলক বক্তব্য দেয় তারা জঙ্গি, রাষ্ট্রদ্রোহী। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি, এখনই সময়।

লেখক: সাংবাদিক

ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/এসকেএস