অভাবিত মৃত্যু: পাশে আছেন যাঁরা, প্রণতি তাদের...

মোহন রায়হান
 | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৩৭

মা ও খালাকে একই কবরস্থানে পাশাপাশি সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত করে ফিরে এলাম মায়ের মৃত্যুনগরী; যানজট-জনজট-লুটপাট-ক্ষমতাবিকার, দুষিত বায়ু আর বেদনার রাজধানী হৃদয়হীন ঢাকায়।

মৃত্যু অনিবার্য, তবু মনকে প্রবোধ দিতে পারছি না। মার বয়স হলেও তিনি সচল-সজীব ছিলেন। আমার নানা বেঁচে ছিলেন ১১০ বছর। তাই নীরোগ মায়ের মৃত্যুর জন্য আমার মন প্রস্তুত ছিল না। উপরন্তু করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আইসিইউ না পেয়ে শ্বাসরুদ্ধ মৃত্যু, আমি কোনোভাবেই ভাবতে পারি না!

মার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তাঁর প্রায় ২৫ বছরের ছোট বোন, আমার খালা হার্ট আ্যাটাকে মারা যান! দুই বোনকে একই সময়ে পাশাপাশি কবরে নামানোর বেদনা কতটা ভারী, কবি হয়েও আজ তা বোঝাতে অক্ষম আমি। আমার জীবনের সবচেয়ে আক্ষেপ আর কষ্টের এই মৃত্যুকে নিয়ে আমি লিখব, আমার জবানবন্দী।

মার মৃত্যুতে আমি যখন শরাহত পাখির মতন অসহায়-কাতর। দেশ-বিদেশ থেকে অনেক মানুষ-সাধারণ থেকে বিখ্যাত, রাজনীতিক থেকে সন্ন্যাসী, শিক্ষক থেকে অশিক্ষিত, লেখক, কবি, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিল্পী, আমলা, পুলিশ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সহযোদ্ধা, সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধবী, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, পরিচিত-অপরিচিতরা শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন, লিখেছেন। তাদের সেই আশ্রয় ছাড়া এ মহাভার বহন করা আমার জন্য অসম্ভব ছিল। আমার মার চিকিৎসার জন্য যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে অসীম কৃতজ্ঞতা আর ভালবাসা। আমি তাদের দাসখত লিখে দিয়েছি আমার নিজের আদালতে। সকল শুভানুধ্যায়ীর এই সহায়তা ও ভালবাসার ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারব না।

তাদের প্রতি আমার প্রথম কামনা, কল্পনাতীত এই মহামারির বিশ্ব বিপর্যয়ে আপনারা অতিসতর্ক থাকবেন, সুরক্ষিত থাকবেন। অসুখের বিরুদ্ধে লড়াইটা আমাদের পুরুষানুক্রমিক। সিরাজগঞ্জের প্রথম বৃহৎ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা আমার বাবা আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিক ফরহাদ হোসেন। এই ব্রতে আমিও হৃদরোগীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি একটি হাসপাতাল। মায়ের মৃত্যু এই ব্রতে আমাকে ‌আরো একাগ্র, নিবিষ্ট করেছে। করোনা সংক্রমণে সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে হৃদরোগীরা।

তাই সকলের কাছে আমার বিনীত আহ্বান- কারো হার্টে কোনো সমস্যা দেখা দিলে, কোথাও চিকিৎসার সুযোগ না পেলে, সরাসরি সাওল হার্ট সেন্টারে যোগাযোগ করবেন। অনলাইন চিকিৎসাসেবা দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে(ইমার্জেন্সি ছাড়া)। এই মহাদুর্যোগে সাওল হার্ট সেন্টার আপনাদের পাশে আছে। আমি চাই না, আমার মার মতন একটি মানুষও যেন এই দুঃসময়ে চিকিৎসার অভাবে মারা যান। ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন। শুভকামনায়। আপনাদের প্রীতি ও সহায়ধন্য-

লেখক: কবি

ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :