বৈশাখে মাসে বাড়ে তাদের কদর

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৪১ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে হাওরাঞ্চলে এক সময় প্রতিটি পরিবারে বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা ছিল। কদর ছিল এর সঙ্গে জড়িত মালিক, শ্রমিক, কারিগরদেরও। কিন্তু একদিকে বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক শিল্পের প্রসারের কারলে আজ হারাতে বসেছে সেই শিল্প। অনেকেই বদলে ফেলেছেন পেশা।

তবে বৈশাখ মাস এলেই বাঁশ ও বেত শিল্প ও কৃষি কাজে ব্যবহৃত অন্য সব ধরণের পণ্যেরও কদর বেড়ে যায়। এই সময়টাতে পণ্য সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয় কারিগরদের। 

বৈশাখে হাওরাঞ্চলে পুরুদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়। তাই বাশঁ দিয়ে তৈরি টোকরি, উড়া, কুলা, কাদি, ডুল, জাকি, চালনিসহ নানা জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়ে। জেলার ১১টি উপজেলার বাজার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈশাখ মাসে ক্রেতাদের সমাগমে মেলায় পরিণত হয়ে উঠে বাজারগুলো। বাজারে কৃষি পণ্যের হাটগুলোতে বিশাল আয়োজন থাকলেও বাঁশের তৈরি পণ্যের চাহিদা থাকে বেশি। 

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অনেক বিক্রেতা তুলনামূলক ভাবে এসব পণ্যগুলোর দাম বেশি নেওয়ার।

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে সোহেল মিয়া বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম বাজারে। কিন্তু কিছুই করার নেই। মাঠের ধান ঘরে তুলার জন্য এসব পণ্যের তুলনাই নেই। তাই বেশি দামেই নিতে হচ্ছে। সব কিছুতেই এখন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করেন। বৈশাখ মাসকে ঘিরে কৃষি পণ্যের ব্যবসায়ীরাও তাই করেছেন। সব ধরণের পণ্যের গলাকাটা দাম নিচ্ছেন তারা।

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, সারাবছর চাহিদা কম থাকায় এসব পণ্য উৎপাদনের সাথে জড়িত অনেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাদের (ব্যবসায়ীদের)। আমিনুল, সাকিবুরসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দাবি, এসব পণ্যের কাঁচামালের দাম অনেক বেশি বলেই তারা বেশি দাম রাখতে বাধ্য হন। আগে একজন শ্রমিকে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি দিলেই হতো। এখন দিতে হয়  ৬০০ টাকা। 

বাঁশের জিনিসপত্রের মতো দাম বেড়েছে লোহার তৈরি জিনিসপত্রেরও। বালিজুড়ী ইউনিয়নের কামার রাশেদ বলেন, কাঁচামালের দাম কয়েকগুন বেড়েছে। তাই তৈরি জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে।  

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বাশঁ ও বেত শিল্প এবং কামার শিল্প আমাদের আদি শিল্প। নানান কারলেই আজ তারা অবহেলিত। তাদের রক্ষায় সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/পিএল)