সেই রেদওয়ানার শিশুকে মামার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হলো
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে খুন হওয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামের শিশু কন্যাকে বৈধ অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে শিশুটির মামা খন্দকার মো. আরশাদুল আবিদ বৈধ অভিভাবক হিসেবে শিশুটিকে বুঝে নেন।
রবিবার দুপুরে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক, প্রবেশন কর্মকর্তা ও কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপস্থিত থেকে শিশুটি হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, গত ২২ মার্চ ১০টায় সিজার অপারেশনের মাধ্যমে জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম মেয়ে শিশুর জন্ম দেন। ২৬ মার্চ হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তবে মেয়ে অসুস্থ থাকায় তিনি ছুটি না নিয়ে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১১ নম্বর কেবিনে ভর্তি থাকেন। শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালের কেবিনের দরজা বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে রেদওয়ানার মরদেহ দেখতে পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, কালচারাল কর্মকর্তা খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম খুন হওয়ার পর থেকে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন মিজান ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
শিশুটিকে বৈধ অভিভাবকের কাছে বুঝিয়ে দিতে গত ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খানকে আহ্বায়ক ও টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ডিডি) মো. শাহ আলমকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের উপকমিটি গঠন করা হয়।
উপকমিটির কাছে মামা খন্দকার আরশাদুল আবিদ শিশুটিকে পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে শিশুরটির বাবার পরিবার থেকে শিশুটিকে নেওয়ার জন্য আবেদন না করায় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিশু আইন ২০১৩ এর ৮৪ ধারার উপধারা (৩) এ উল্লেখিত বর্ধিত পরিবারের সহিত পূন:একীকরনের উদ্দ্যেশে ৮৬ নং ধারা অনুসরনপূর্বক শিশুটির নিরাপদ হেফাজত, যত্ন, পরিচর্যা এবং সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর এবং ১৮ বছর পর্যন্ত প্রবেশন অফিসার শিশুটিকে তদারকি করবেন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
রেদওয়ানা ইসলামের স্বামী দেলোয়ার হোসেন মিজান পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর চার ভাঙ্গারিয়া গ্রামের মো. এলাহী মোল্লার ছেলে। তিনি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ভোলা সদরের মহাজনপট্টি শাখায় কর্মরত।
অন্যদিকে নিহত রেদওয়ানা ইসলাম রংপুর সদর থানার ইসলামপুর হনুমানতলার মৃত খন্দকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
কুমুদিনী হাসপাতালের এজিএম (অপারেশন) অনিমেষ ভৌমিক জানান, ‘শিশুটির অবস্থা ভালো রয়েছে। গত ৩ এপ্রিল শনিবার ছুটি হলেও হাসপাতালের নার্সদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল।’ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা বিলের মধ্যে ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান ও টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, শিশুটির মামার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিশুটিকে মামার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/এলএ)