সিলেটের সাতকড়ায় লোভনীয় স্বাদ

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০২১, ১৪:০৭ | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১, ১৮:০৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সাতকড়ার নাম শুনলেই জিভে জল আসে অনেকের, বিশেষত সিলেটিদের। যারা একবার সাতকড়া দিয়ে মাংস রান্না খেয়েছেন, ভাত অথবা খিচুড়ির সঙ্গে সাতকড়ার আচার খেয়েছেন তাদের জিহ্বায় লেগে আছে সেই স্বাদ। সিলেটের সাতকড়া মাংস, ইলিশ মাছ আর ডালে দিয়ে খেতে খুব ভালো লাগে।

ব্যতিক্রমধর্মী আর আকর্ষণীয় ঘ্রাণের জন্য সাতকড়া সিলেট অঞ্চলে রসনার অন্যতম অনুষঙ্গ। সাতকড়ায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা মানব দেহের জন্য দারুণ উপকারী।

লেবু জাতীয় এই ফলটি সিলেটের সাতকড়া নামে দেশব্যাপী পরিচিত। সাতকড়ার আচার সারাদেশে বিক্রি হয় সিলেটের সাতকড়া নামেই! দেশের অন্যান্য স্থান থেকে সিলেট ভ্রমণে কেউ গেলে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা যারা সাতকড়ার সঙ্গে পরিচিত তারা চায়ের সঙ্গে সিলেটের সাতকড়ার বায়নাও ধরেন।

সিলেট অঞ্চলের মানুষের প্রাত্যহিক রান্নায় বিশেষ করে মাংস রান্নায় এক অপরিহার্য উপাদান সাতকড়া। এটি ছাড়া অধিকাংশ লোকের রসনা বিলাসই যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত সিলেটের অধিবাসীরা কাঁচা অথবা রোদে শুকানো সাতকড়া নিয়ে যান প্রবাসে।

উনিশ শতকের গোড়ার দিকে সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় সাতকড়া চাষ শুরু হয়। কমলা লেবুর মতো সাতকড়ার গাছ বড় হয়। বর্তমানেও মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে সাতকড়া চাষ হচ্ছে অল্প-বিস্তর। তবে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চাহিদার তুলনায় ফলন কম।

সাতকড়া সংরক্ষণের পদ্ধতি

সাতকড়ার আশ কেটে শুকিয়ে ৬/৭ মাস অবধি অনায়াসেই সংরক্ষণ করা যায়। তবে মাঝেমধ্যে রোদে শুকিয়ে নিলে নষ্ট হওয়ার সম্ভ‍াবনা থাকে না। সাতকড়া লম্বালম্বিভাবে একটি পুরু করে ১২ থেকে ১৪ টুকরা করে কেটে বেশ কদিন রোদে শুকিয়ে পলিথিনে মুড়ে একটি পাত্রে রেখে দিতে হবে। যখন খাওয়া প্রয়োজন রান্নার ১ ঘণ্টা আগে পানিতে ভিজিয়ে হবে। একদম স্বাভাবিক সাতকরার স্বাদ ও গন্ধ পাওয়া যাবে। আর সেটা রান্না করতে পারবেন কাঁচা সাতকরার নিয়মেই।

ভাপ দিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণের পদ্ধতি

সবচেয়ে সহজ আর উপযুক্ত পদ্ধতি হচ্ছে ভাপ দেওয়া পদ্ধতি। সাতকড়া কেটে রসালো লেবুর অংশ ফেলে দিয়ে ১২-১৪ টুকরা করে শুধু পানিতে ৮-১০ মিনিট জাল দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে যেকোনো একটি পাত্রে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন।

এমনভাবে সাজিয়ে রাখবেন যেন প্রয়োজন হলে এক টুকরাও নিতে পারেন। একই নিয়মে কয়েক মাস রাখলেও সাতকড়ার স্বাদ-গন্ধ অটুট থাকে। এতে একদম কাঁচা সাতকরা রান্নার স্বাদই পাওয়া যায়।

ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/এসকেএস