ঢাকাইয়া ইফতারের ইতিকথা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৫৭ | প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১৪:০৭

খাদ্য রসিক হিসেবে পুরান ঢাকার মানুষের সব সময়ই আলাদা একটা সুনাম রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতাই পুরান ঢাকার ইফতার বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। বিশেষ করে সমগ্র ঢাকার মানুষেরাই পুরান ঢাকার ইফতারের আলাদা কদর করেন। আর এ এলাকার মানুষের ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ছাড়া ইফতার যেন জমেই না। ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়' এ যেন পুরান ঢাকার ইফতারের সঙ্গে বহুল পরিচিত একটি সোলক।

ঢাকার বয়স ৪০০ বছরের বেশি হলে ঢাকার ইফতারির ইতিহাসটাও চার শতাব্দীর। সেই আদিকালে ইফতার করাকে বলা হতো ‘রোজা খোলাই’। এখনো পুরান ঢাকার অনেক এলাকায় রোজা খোলাই শব্দটির প্রচলন রয়েছে। রোজা খোলাই কথাটি নতুন মনে হতে পারে, কিন্তু রমজান মাসে পুরান ঢাকার আদি বাসিন্দারা এই শব্দটির ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিল বা বলা যায় কিছু কিছু এলাকায় এখনো আছে। রোজা খোলাই অর্থ ইফতার করা।  মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে রোজা খোলাই শুরু হলেও এর জন্য আয়োজন শুরু হয়ে যেত সাত সকালে। ইফতারি বানানোর রেওয়াজ পুরান ঢাকার প্রতি ঘরে ঘরে। তারপরও পুরান ঢাকার ইতিহাস বলে, ঢাকাইয়ারা সব সময় বাইরের খাবারে আকর্ষণ বোধ করে। সে কারণেই বাইরের ইফতারির টান সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে।

৪০০ বছরের পুরাতন বাজার চকবাজারই ছিল ঢাকার প্রধান বাজার। সে সময় চকবাজার বাদশাহি বাজার নামে পরিচিত ছিল। চকবাজারের মতো না হলেও রায়সাহেব বাজার নাজিরাবাজার পুরান ঢাকার নামকরা বাজারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। দিনে দিনে ঢাকা শহরটাই হয়ে গেছে ইফতারির বাজার। তারপরও ইতিহাস ও স্বাদের কথা বললে পুরান ঢাকার কথাই প্রথমে চলে আসে। আর পুরান ঢাকা মানেই বাদশাহি চকবাজার, রায়সাহেব বাজার ও নাজিরাবাজার।

চকবাজার ইফতারিপাড়া মোঘল ঐতিহ্যের ধারক। এখানকার ইফতারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য আস্ত মুরগির কাবাব, মোরগ মুসাল্লম, বটিকাবাব, টিকাকাবাব, কোফ্তা, চিকেন কাঠি, শামিকাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতিকাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, জিলাপি, শাহি জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, সৌদি পানীয় লাবাং, কাশ্মীরি সরবত, ইসবগুলের ভুসি, পুরি এবং ৩৬ উপকরণের মজাদার খাবার ‘বড়বাপের পোলা’ খায়সহ কতনা পদ।

বড় বাপের পোলায় খায়

নামকরা তথা ঐতিহ্যময় একটি ইফতারি পণ্য। এটি তৈরিতে ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুচি, মুরগির গিলা কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল, মিষ্টি কুমড়াসহ ১৫ পদের খাবার আইটেমের সঙ্গে ১৬ ধরনের মসলা মিশিয়ে ৩১ পদের যে মিশ্রণ তৈরি হয় তার নামই ‘বড় বাপের পোলায় খায়। '

একটি বড় গামলায় এই ৩১ ধরনের খাবারসামগ্রী দুইহাতে ভালোভাবে মেখে তারপর ঠোঙায় করে বিক্রি করা হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরিকৃত এই খাবারটি কিনতে ছোট-বড় সব বয়সী রোজাদারের মধ্যে রীতিমতো কাড়াকাড়ি লেগে যায়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এর স্বাদ নতুন প্রজন্মের কাছেও পৌছে গেছে। ছড়িয়ে গেছে এই মুখরোচক খাবারটির গল্প।

ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

ইফতার ও সাহরিতে বাহারি আয়োজন ধানমন্ডির দ্য ফরেস্ট লাউঞ্জে

বারবার ফোটানো চা খেলেই মারাত্মক বিপদ! বাঁচতে হলে জানুন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :