করোনায় ১৭০ পরিবারের পাশে হাসিমুখ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০২:১৭

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মেক্সিকো, ব্রাজিল, ভারত, আমেরিকার মতো নাস্তানাবুদ বাংলাদেশও। আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা দুটোই বেশ চোখ রাঙাচ্ছে। বেসামাল এই পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশে টানা তিন সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন জারি রেখেছে সরকার। যার ফলে কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। তেমনই ১৭০টি অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিল হাসিমুখ সমাজ কল্যাণ সংস্থা।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ধানমন্ডির মেহেরুন্নেসা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাতিরপুল, বাংলামোটর, কাঠালবাগান ও পরিবাগে বসবাসরত ১৭০ পরিবারের মধ্যে এই খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। যা দিয়ে প্রতিটি পরিবার অন্তত ১০ দিন চলতে পারবে। খাদ্য সামগ্রীগুলোর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা এবং আলু। এসব খাদ্য সামগ্রীর স্পন্সর করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

সমাজের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা হাসিমুখ সমাজ কল্যাণ সংস্থা গত বছরের লকডাউনের সময়েও কয়েক দফায় ছয় শতাধিক অসহায় পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছিল। এছাড়া গত বছর আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণসহ আম্ফান কবলিত এলাকায় বসিয়েছিল গভীর নলকূপ। পাশাপাশি সে সময় বানভাসি মানুষদেরও খাদ্য সহায়তা দেয় সংস্থাটি।

ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে ও রাস্তার ধারে বেড়ে ওঠা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে হাসিমুখ সমাজ কল্যাণ সংস্থা। এ লক্ষে সংস্থাটি ‘হাসিমুখ’ নামে একটি বৈকালিক স্কুল পরিচালনা করে। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে স্কুলটির কার্যক্রম। এখানে অধ্যায়নরত দুই শতাধিক বাচ্চার মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াতে প্রতিদিনই নিরলস সেবা দেন এক ডজনের বেশি উদ্দমী স্বেচ্ছাসেবক। প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর প্রতিটি বাচ্চাকে দেয়া হয় দুধ, ডিম, কলার মতো পুষ্টিকর সব খাবার।

এর পাশাপাশি শিক্ষার সব উপকরণও বাচ্চারা ‘হাসিমুখ’ নামের এই স্কুল থেকে পায়। এছাড়া বাচ্চাদের কারিগরি জ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে সংস্থাটি থেকে একটি কম্পিউটার ল্যাবও পরিচালনা করা হয়। প্রতিদিন সেখানে বাচ্চাদের আইটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন একটি দক্ষ আইটি টিম। পাশাপাশি দেশের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে বাচ্চাদের পরিচিত করাতে ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরের মতো জাতীয় দিবসগুলো প্রতি বছর ঘটা করে পালন করে সংস্থাটি। বাদ যায় না পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুনও।

এত এত ভালো কাজের পুরস্কারও পেয়েছে হাসিমুখ সমাজ কল্যাণ সংস্থা। ২০১৭ সালে ‘ইউনাইটেড মুভমেন্ট ফর হিউম্যান রাইটস’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে ‘মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড’ পান হাসিমুখের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক নুসরাত একা। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নানা অধিকার ও সুযোগ সুবিধা প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করা এবং সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় তাকে এই সম্মাননা দেয়া হয়। ২০১৯ সালে একই সংস্থা থেকে হাসিমুখ পায় ‘শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক স্মৃতি সম্মাননা’।

দীর্ঘদিন পরিবাগ ওয়াবদা কোয়ার্টারের সামনের রাস্তায় হাসিমুখের কার্যক্রম চললেও বাচ্চাদের নানাবিধ নিরাপত্তা বিবেচনায় ২০১৯ সালে স্কুলটির স্থান পরিবর্তন হয়। গত প্রায় দুই বছর ধরে ৫৪/১, নর্থ সার্কুলার রোড, আকলিমাবাগ, ধানমন্ডিতে অবস্থিত মেহেরুন্নেসা গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে চলে হাসিমুখের কার্যক্রম। তবে সরকারি আদেশ মেনে গত বছরের লকডাউনের পর থেকেই স্কুলটির পাঠদান কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। সরকার স্কুল খোলার ঘোষণা দিলে হাসিমুখের পাঠদানও চালু হবে।

ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :