মরণের নাটশালায় জীবনের জয়গান
প্রকাশ | ২৯ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৪৫
মানুষ কষ্টে আছে, এসো তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই,
সহমর্মের অশ্রু হয়ে, দু:খের দোসর হয়ে, দুহাত বাড়াই।
জীবনপ্রবাহ এখন পড়েছে এমন প্রমত্ত ঘূর্ণিঝড়ে,
জীবনের পোক্ত পাটাতন হয়ে গেছে অতি নড়বড়ে।
রূপকথার দানবের মতো মৃত্যুর করাল রাহুগ্রাসে,
জীবনের প্রাণশক্তি কাঁপে নিরুপায় সন্ত্রাসে।
দুয়ারে দুয়ারে শুনে যমদূতের নিষ্ঠুর কড়ানাড়া,
স্বজন হারানোর শোকে মূহ্যমান শোকার্ত বসুন্ধরা।
মানুষ কষ্টে আছে; এসো তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই,
সহমর্মের অশ্রু হয়ে, দু:খের দোসর হয়ে, দুহাত বাড়াই।
চারদিকে কেবল জীবন হানির দু:সংবাদই শুনি,
নিজেই কখন দু:সংবাদ হই, যেনো সেই ক্ষণই গুনি।
মন্দ খবর শুনে শুনে যেনো আয়ুই যাচ্ছে কমে,
জানিনা কখন কার যে দুয়ারে কড়া নাড়ে মহাযমে!
ভরসাবিহীন বিশ্বে কেবল বিধাতারই নাও শরণ,
তাঁর ইচ্ছার কাছে দাও সঁপে তোমার জীবন মরণ।
কিংকর্তব্যমিমূঢ় শব্দের মানেটা বুঝিনি আগে,
হতবুদ্ধির সেই সংকটই জীবনের পুরোভাগে।
কী করলে যে কোন ফল হবে; জানা নেই আগাগোড়া,
জনপদে কেবল দাপটে বেড়ায় যমের আরবি ঘোড়া।
যেনো দুর্দম অসুর মেতেছে তাজা প্রাণ সংহারে,
মানুষ কতো যে অসহায় হয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
মৃত্যুদূত জারি করে স্বেচ্ছাচারী অকাল সমন,
কোন সে রহস্যে যেন মানুষ নামক জীবের চলছে দমন।
মানুষ কষ্টে আছে; এসো তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই,
সহমর্মের অশ্রু হয়ে, দু:খের দোসর হয়ে, দুহাত বাড়াই।
সে মানবজীবন; কেমন বিষন্ন বিপন্ন জীবন,
যে জীবনের প্রতি দমে মারীর নির্দয় নিপীড়ন!
জীবন মৃত্যু জানি সৃষ্টিরই অমোঘ বিধান,
তবুও মানুষ চায় হোক তার স্বাভাবিক অন্তিম প্রয়াণ।
জগতের গতিধারা রক্ষা করা এতোটাই দুস্কর,
খেই হারা পরাণের ফুসফুসে ভাইরাস বাঁধিয়াছে ঘর।
কোন অলৌকিক নিদানে মিলবে মানবের নিষ্কৃতি!
প্রাণে প্রাণে অজানিতে জমে গেছে অনিবার মরণের ভীতি।
মানুষ কষ্টে আছে; এসো তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই,
সহমর্মের অশ্রু হয়ে, দু:খের দোসর হয়ে, দুহাত বাড়াই।
মানুষের প্রাণান্ত কসরত অবিরাম নিত্য বহমান,
মৃত্যুর মুখোমুখি মানুষ; তবু গায় জীবনের গান।
পরিত্রাণের পথ যেনো গেছে চিতা বা গোরস্থানে,
জীবনই যেনো জীবন বাঁচাতে মৃত্যুকে কাছে টানে।