সভ্যতা নাকি অরণ্য শান্তি কোথায়!

প্রকাশ | ৩০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩৮

আবু বকর সিদ্দিক

রবীন্দ্রনাথ একটা জায়গায় বলেছিলেন- "দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর"।

আমার বহু আগ থেকেই নগর সভ্যতা এইসব ফিকে দালানপাঠ তেমন টানে না। যদিও বা অনিচ্ছা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন থেকেই থাকা লাগে। আমাদের জীবনে অনেককিছু আমরা অনিচ্ছাকৃত করি। মানুষ আরামের জন্য শহর নগর বন্দরে পাড়ি জমায়। ঠিক কিছু বছর অতিবাহিত হওয়া বাদে মানুষ ঠিক আগের সেই মফস্বল গ্রাম হাওয়া বাতাস এইসব খুঁজে বেড়ায়।

মানুষ ফিকে সুন্দরের জন্য হায় হুতাশ করে কিন্তু দীর্ঘ দিন যাওয়ার পরে এইসব কৃত্রিম নগর ব্যবস্থা মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলে।

শুধুমাত্র মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক চাওয়া পাওয়ার দরকার না থাকলে মানুষ নিশ্চিত মফস্বলে বা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করতো আজীবন। মানুষ সুখ খুজতে গিয়ে পাগল হয়ে যায় কিন্তু জীবন সায়াহ্নে এসে সেই সুখ আর খুজে পায় না। হাহাকার বুক ভরা আক্ষেপ নিয়ে মানুষ মারা যায়।

শুধুমাত্র এই করোনার কথাই যদি বলি তাহলে দেখা যাবে যে, জগতের সব অতি অগ্রসরমান নগরীতে ই বেশিরভাগ মানুষ মারা যাচ্ছে। সেটা লন্ডন হউক কিংবা নিউইয়র্ক হউক বা দিল্লি হউক বা ঢাকা হউক। যেখানেই মানুষ প্রকৃতি র সাথে যুদ্ধ করে ঠিকে থাকতে চেয়েছে একটা সময় এই প্রকৃতি ই আবার ঠিকই তাদেরকে নানারকম দূর্যোগ বা মহামারি দিয়ে নগর থেকে বিতাড়িত করেছে।

বিশ্বের তাবৎ প্রভাবশালী ব্যক্তি বা ধনী ব্যক্তিরা আজকাল আর মূল শহরে থাকে না। তারা সব থেকে দূরে প্রকৃতি র কাছাকাছি নিরিবিলি বাড়ি বানিয়ে জীবন কাটায়। আপনি জগতের সবচেয়ে বিলাস বহুল শহর গুলোর কথাই যদি ধরেন দেখবেন সব ধনী লোকেরা মূল শহর থেকে দূরে আবাসন গড়ে তুলছেন।

জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন দিনের পর দিন প্রায় প্রতিটি নগরীকে একটা জীবন্ত আগুনের চুল্লিতে পরিণত করে দিচ্ছে। মানুষ বড় অসহায় হয়ে শান্তির জন্য দিক বিদিক ছুটাছুটি করছি কিন্তু কোথাও শান্তি পাচ্ছে না।

রবীন্দ্রনাথ সেই কত আগেই এইসব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন বলেই হয়তোবা বলে গিয়েছিলেন- "দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর।"

খুব বেশি দূরে নয়। খুব শীঘ্রই আবার প্রকৃতির কাছাকাছি নিরিবিলি থাকার জন্য মানুষ সবকিছু ছেড়ে অরণ্যেই ফিরবে বলে আমার ধারণা।

 

 

লেখক: সংগঠক, চিন্তক ও লেখক।

ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এসকেএস