ডাইনামিক কাজলের নেতৃত্বে এগিয়ে যাক সুপ্রিম কোর্ট বার

আমিনুল ইসলাম মল্লিক
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২১, ১১:২২

অত্যন্ত মেধাবী, সৃজনশীল, এনার্জেটিক, সাহসী ও আইনজীবী বান্ধব নেতা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এজন্য তাকে ডাইনামিক লিডার বলেই সম্ভোধন সম্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবীরা। কঠোর পরিশ্রমী, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কাজল আন্তরিকতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে শিখেছেন।

তার লিডারশিপ গড়ে উঠেছে প্রয়াত দেশ বরেণ্য প্রখ্যাত আইনজীবী খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমদের হাতে ধরে। একটি মামলায় মক্কেলকে জিতাতে তার খুরধার যুক্তি ও আইনী পয়েন্ট উপস্থাপন কার না ভালো লাগে। এক কথায় অসাধারণ। এ কারণে সবাই তাকে পছন্দ করেন। দলমতের উর্ধ্বে উঠে সবাইকে নিয়ে কাজ করার মনমানসিকতার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই আইনজীবী নেতা।

কোর্টে প্রতিপক্ষের আইনজীবীকে যখন পিঠে হাত বুলিয়ে মামলার শুনানিতে যান, তখন কিন্তু বাস্তবতা ঘুরে দাড়ায়। এখানেই উকালতি। অনেক সময় গাদা গাদা বই পড়েও ওকালতিতে জেতা যায় না। উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা ওকালতির চৌকশ নেতৃত্বেরই বহি:প্রকাশ। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের শুরুতেই করোনার ধাক্কায় পড়েন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সতর্কতার সঙ্গে মনে অদম্য সাহস নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম কাজল প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন সুপ্রিম কোর্টে।

মক্কেলকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় নিয়মিত মামলার শুনানি করেন আদালত থেকে আদালতে। সেটি হোক ভার্চুয়াল হোক নিয়মিত কোর্ট। নিরন্তর ছুটে চলা এ মানুষটি করোনা কালে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে অসুস্থ্ হয়ে পড়েন। তারপরেও বসে থাকেননি আইনজীবীদের কল্যাণে কাজ করতে। প্রতিবাংলাদেশেও মহামারি করোনার প্রভাব বাংলাদেশেও ব্যাপক তারা বলছেন, বিশ্বব্যাপি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইন অঙ্গনে কাজলের ভুমিকা ছিল প্রশংসা পাওয়ার মতো।

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে করোনা শুরুর পরপরই আর্থিক মানুষিক ও পারিপার্শ্বিকভাবে মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখিন হয় মানুষ। যার প্রভাব আদালত অঙ্গনেও ছিল চোখের পড়ার মতো। মামলা মোকাবিলা ও মক্কেল সংকটে পড়ে যান এই অঙ্গনের অনেকেই। আদালত বন্ধ হয়ে গেলে বিশেষভাবে বিপাকে পড়েন নবীন ও জুনিয়র আইনজীবীরা। বন্ধ হওয়া আদালত পরিচালনা করতে আইন পাস করা হয় ভার্চুয়াল কোর্টের।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মতো বড় একটি প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব পর পর নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দেয়া দুরুহ ব্যাপার। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালে অনলাইনে মামলা পরিচালনায় জুনিয়রদের সহযোগিতা করা, প্রতিনিয়ত সুপ্রিম কোর্টে প্রাঙ্গণে আসা, মামলা পরিচালনায় অল্প ফি নিয়ে জুনিয়র আইনজীবীদের পাশে দাড়ানো ও তাদের পরিবারের জন্য করোনা সুরক্ষা বুথ তৈরি করা নানান সমস্যা সমাধানে কাজল আইনজীবীদের কাছে কাজল হয়ে ওঠেন বটবৃক্ষ।

অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা বলছেন, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চা থকেছেন কাজল। এজন্য বিপরীত মেরুর আইনজীবীরা নিরব সমর্থন দিয়েছেন। তারা বলেছেন ২০২০-২১ সেশনে সম্পাদক থাকা অবস্থায় আইনজীবী সমিতির উন্নয়নমূলক কাজে সরকারের দেয়া বরাদ্দকৃত অর্থ সময় মতো ব্যবহার, আধুনিক বার ভবন গড়তে সংস্কারমূলক কাজ কাজলকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বার ভবনে ঢুকতে দৃষ্টি নন্দন প্রবেশ পথ ও আইনজীবীদের সুবিধার জন্য করেছেন ডে-কেয়ার সেন্টার

সম্পাদক পদে বিজয় হওয়ার পর তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আব্দুল আলিম মিয়া জুয়েল ছুটে চলে এসেছেন। দেখা করেছেন। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েন। কোলাকুলি করেছেন। এতে করেও বোঝা যায় কাজলের প্রতি ভালোবাসা অনেকেরই।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১০ ও ১১ মার্চের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সম্পাদক নির্বাচিত হলেন বিএনপি সমর্থিত ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু। সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের এই সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি এবং একটি সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষসহ ৮টি পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা (সাদা প্যানেল)।

অন্যদিকে সম্পাদক ও একটি সহ-সভাপতিসহ ৬টি পদে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। এবারের নির্বাচনে ৭ হাজার ৭২২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৫ হাজার ৪৮৬ জন আইনজীবী।

লেখক: আইন সাংবাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক, ল' রিপোর্টার্স ফোরাম, ঢাকা

ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

মুক্তমত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা