রাণীনগরে হলুদ জাতের তরমুজ চাষে সাফল্য

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
 | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২১, ১৫:৫৫

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে রসালো ফল ‘হলুদ জাতের তরমুজ’ চাষ করেছেন কামতা গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে গাছে ফল দেখে পর্যাপ্ত লাভবান হবেন, এমনটাই আশা করছেন এই কৃষক। তিনি বলছেন প্রতিদিন শত শত লোকজন আসছেন এই তরমুজ দেখতে। উপজেলার পারইল ইউনিয়নের কামতা মোড়ের রাস্তার পাশের জমিতে এই তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

কামতা গ্রামের কামরুজ্জামান হিরু জানান, তার বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান প্রায় তিন মাস আগে ইউটিউবে ‘হলুদ জাতের’ এই তরমুজ চাষ, চাষের ধরন এবং সফলতা সম্পর্কে ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর বাড়িতে সবার সঙ্গে পরামর্শ করেন এই তরমুজ চাষ করার জন্য। নতুন জাতের এই তরমুজ চাষ করতে বাড়ির সবাই তাকে উৎসাহিত করেন।

এরপর খোঁজ নিয়ে ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। হিরু বলেন, বীজগুলো প্রথমে ৭২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে এরপর পানি থেকে তুলে ২৪ ঘণ্টা বালির মধ্যে রাখতে হয়। এসময় অঙ্কুর গজালে ট্রেতে করে সাত দিন পর্যন্ত রাখার পর জমিতে রোপণ করেছেন। শুরু থেকে জমিতে জৈবসার, অন্যান্য সার প্রয়োগের পর বেড তৈরি করে পুরো বেড পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে গাছ রোপণ করেছেন। মাত্র এক মাসের মাথায় গাছে ফুল ও ফল এসেছে।

কামরুজ্জামান হিরু জানান, গাছ রোপণ করেছেন মাত্র দুই মাস হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ১৮০০ থেকে দুই হাজারের মতো ফল এসেছে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে মাত্র ৩০ শতক জমিতে এই আবাদ করেছেন। তিনি বলছেন বীজ কেনা, জমি তৈরি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৫১ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তবে যে পরিমান ফল এসেছে তাতে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

কামরুজ্জামান হিরু জানান, তিনি স্থানীয় কামতা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ক্ষেতে বড় ভাইয়ের পাশাপাশি তিনিও যথেষ্ট শ্রম দিচ্ছেন। গরমের সময় শরীরে পানি শূন্যতা রোধ করতে এমনিতেই তরমুজের জুড়ি নেই। তার উপর নতুন জাতের তরমুজ দেখে লোকজন হুমড়ি খেয়ে পরছেন। রাস্তার পাশে আবাদ হওয়ায় প্রতিদিনই শত শত লোকজন দেখতে আসছেন এবং তরমুজ কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

তিনি জানান, যে পরিমানে চাহিদা রয়েছে তাতে ৫০০ মণ তরমুজ হলেও চাহিদা মিটানো যাবে না। ইতোমধ্যে জমি থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের একটি তরমুজ তুলেছেন বাড়িতে খাবার জন্য। উপরে গায়ের রং হলুদ হলেও ভিতরে একদম অন্যসব তরমুজের মতো লাল এবং স্বাদও অনেক বেশি। আগামী বছর অধিক পরিমানে জমিতে এই তরমুজ চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, রাণীনগর উপজেলায় এবার প্রায় পাঁচ হেক্টর জমিতে কুইন, ব্লাক কুইন, মধুমিতাসহ বেশ কয়েক জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। কিন্তু হলুদ জাতের তরমুজ এই প্রথম চাষ করেছেন কামতা গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান। আমরা জানার পর থেকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। আশা করছি আগামী বছর এই জাতের তরমুজ চাষ আরো বাড়বে এবং কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :