পরিবারে ফিরতে চান স্মৃতি হারানো এই নারী

প্রকাশ | ০৪ মে ২০২১, ১৯:৩৭

মমিনুল ইসলাম বাবু, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দীর্ঘ প্রায় আট বছর ধরে স্মৃতিশক্তি হারানো নাম পরিচয়হীন চল্লিশোর্ধ্ব এক নারী একটি পরিবারে আশ্রয়ে আছেন। এরই মধ্যে আশ্রয়দাতা মারা গেছেন। এরপর তার সন্তান আগলে রেখেছেন এই নারীকে। এখন সেই পরিবারের লোকজনও চান স্মৃতিভ্রম ওই নারী শেষ বয়সে তার পরিবারের কাছে ফিরে যাক। সান্নিধ্যে থাকুক পরিবারের সদস্যদের। এজন্য তার ছবি নিয়ে প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

আশ্রয়দাতা সুইট রানা বলেন, ২০১২ সালের দিকে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহটি এলাকায় অসুস্থ অবস্থায় এই নারীকে পাওয়া যায়। সেই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় চাকিরপশার ইউনিয়নের ফুলকার চাকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আমার মা ফাতেমা বেগম লোকজনের অনুরোধে অসুস্থ নারীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

তকে চাকিরপশার ইউনিয়নস্থ রতিরাম কমলওঝায় নিজ বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলেন ফাতেমা। কিন্তু তার পুরনো স্মৃতি আর ফিরে আসেনি। ফলে বাড়িতেই তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেই কাজকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। এরই মধ্যে ফাতেমা বেগম ২০১৯ সালে মারা যান। এরপর থেকে পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে তাকে নিজেদের সঙ্গে রেখেছেন ফাতেমার পরিবারের সদস্যরা।

সুইট বলেন, এখন আমরাও ওই মহিলার মতো চাই তিনি শেষ সময়ে তার পরিবারের কাছে ফিরে যাক। এতে তিনি তাদের ভালোবাসা পাবেন। আমরাও দায়মুক্ত হবো।

স্মৃতি ভ্রষ্ট এই নারী জানান, তার কিছুই মনে পরে না। তিনি নিজের পরিবার সম্পর্কে জানতে চান। ফিরে যেতে চান তাদের কাছে। কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব সেই পথ জানা নেই তার।

প্রতিবেশী ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ জানান, এই নারীকে সম্মানজনকভাবে মাথা গোঁজার ও খাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম ও তার ছেলে সুইট রানা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার ছবি প্রকাশ করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিলে সবচেয়ে ভালো হয়।

এ ব্যাপারে চাকিরপশার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নাম-পরিচয়হীন এই নারী তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করা হলে তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসতে পারবে। এ জন্য চেয়ারম্যানের ০১৭৩৩৭৩৭৪৯১ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/৪মে/কেএম)