সুন্দরবনে ফের ধোঁয়ার কুণ্ডলি

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ মে ২০২১, ১৯:০২ | প্রকাশিত : ০৫ মে ২০২১, ১৮:১৬

সুন্দরবনে নিভে যাওয়া আগুনের কয়েকটি স্থানে আবারও ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়তে দেখা গেছে। তবে কোথাও দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে না। বুধবার সকালে বনকর্মীরা নিভিয়ে ফেলা কয়েকটি স্থানে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখে সেখানে পানি ছিটিয়ে নিভিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন। নতুন করে আবার আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা দেয়ায় পানি ছিটাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট যোগ দিয়েছে। তারা সেখানে পৌঁছে পানি ছিটাচ্ছে।

এর আগে আগুন লাগার ৩০ ঘণ্টা চেষ্টার পর মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বনে লাগা আগুন নিভে গেছে বলে ঘোষণা দেয় বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। তবে বনের যে এলাকায় আগুন লেগেছিল সেই এলাকাটি পর্যবেক্ষণে রাখার কথা বলে বনবিভাগ। আগুনে বনের এক দশমিক ৩১ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে আগুর লাগার কারণ সম্পর্কে কিছুই বলেনি বনবিভাগ।

গত সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকার ২৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টে এই আগুনের ঘটনা ঘটে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বিকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, বুধবার সকালে সুন্দবনের দাসের ভারানি এলাকায় নিভে যাওয়া আগুনের কয়েকটি স্থানে বনবর্মীরা নতুন ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখতে পায়। তারা সেসব স্থানে পানি ছিটিয়ে তা নেভাচ্ছে। এখানে দাউ দাউ করে জ্বলার মতো কোনো বড় আগুন দেখছি না। তারপরেও আমরা আগাম সতর্কতা হিসেবে ধোঁয়া থেকে যেন আগুনের বিস্তার লাভ না করতে পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট নিয়ে কাজ করছি।

নিভিয়ে ফেলা স্থানে আবার কেন আগুন এই প্রশ্নের জবাবে বন কর্মকর্তা বলেন, সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে গত দেড় দশকে ২৩ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব আগুন নেভানোর কাজে আমি নিজে থেকেছি। সুন্দরবনের যেসব বৃক্ষরাজি আছে তার পাতা মাটিতে পড়ে জমে থাকে। পরিস্কার না করায় এই পাতা পড়ে বড় বড় স্তূপ হয়ে যায়। যেসব এলাকায় পাতার স্তূপ বেশি থাকে সেসব এলাকায় আগুন লাগলে বেশি বেশি পানি ছিটানো না হলে আগুন দেরিতে নেভে। এসব কারণে সুন্দরবনের বেশ কয়েকটি এলাকায় তিন-চারদিন ধরে আগুন ছিল। ওই আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে সেসময় বেগ পেতে হয়েছিল।

এই অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বেলায়েত হোসেন বলেন, গত সোমবার সুন্দরবনের যে এলাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে সেই এলাকায় বিপুল পরিমান লতাগুল্ম গাছপালায় ভরা। সেসব গাছের পাতা পড়ে মাটিতে বড় বড় স্তূপ হয়েছিল। এই স্তূপে আগুন লাগার কারণে স্তূপের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যা না জ্বললে বা ধোঁয়া বের হলে চোখে দেখা যায় না।

এই স্তূপের নিচ থেকে ওই আগুন ধীরে ধীরে সামনে এগোয়। এই স্তূপের যেখানে আগুন জ্বলে বা ধোঁয়া বের হয় তখন তা চোখে পড়ে। সোমবার বিকালে এবং সোমবার সকাল থেকে একটানা পানি ছিটানো হয়। এরপরেও কিছু এলাকায় পাতার নিচে মাটির সঙ্গে কিছু আগুন লুকিয়ে থাকায় বুধবার কয়েকটি স্থানের আগুনের ধোঁয়া দেখা গেছে। এই আগুন পুরোপুরি নেভাতে আমাদের অন্তত আরও তিন-চারদিন গভীর পর্যক্ষেণে থাকতে হবে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জয়নাল আবেদিন বলেন, শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকার ২৪ নম্বার কম্পার্টমেন্টে লাগা আগুন যাতে বড় এলাকায় বিস্তৃতি লাভ করতে পারে সেজন্য প্রায় দেড় একর এলাকায় ফায়ার লাইন (আগুনের অংশের মাটি আলাদা করা) কেটে দেয়া হয়েছে। নতুন কোনো এলাকায় এই আগুন যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য এই ফায়ার লাইন কাটা।

তিনি বলেন, ধোঁয়া নির্দিষ্ট স্থানের মধ্যে রয়েছে। সকাল থেকে কয়েকটি স্থানে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। যেখানেই ধোঁয়ার কুণ্ডলি আমরা দেখতে পাচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পানি ছিটিয়ে নিভিয়ে ফেলছি।

(ঢাকাটাইমস/৫মে/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :