অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি রোধে দুদকের কমিটি

প্রকাশ | ০৬ মে ২০২১, ১৯:৪৯ | আপডেট: ০৬ মে ২০২১, ১৯:৫৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কাজের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাত সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দুদকের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব।

দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্তসংশ্লিষ্ট কাজে দীর্ঘসূত্রতার কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের সুপারিশ করবে এই কমিটি। পাশাপাশি কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের পর্যালোচনা করে করণীয়ও ঠিক করবে।

দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে সাত সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, দুদক গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক মীর জয়নাল আবেদীন শিবলী, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অনুবিভাগের পরিচালক উত্তম কুমরা মন্ডল, বিশেষ তদস্ত অনুবিভাগের পরিচালক মো. আকতার হোসেন আজাদ, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, পরিচালক (মানিলন্ডারিং) গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ও একই অনুবিভাগের উপপরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন।

দুদকের এক ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ঠ কাজে দুদকের কর্মকর্তাদের অনিয়মে জড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। দুদক সেসব বিষয়ে ব্যবস্থাও নিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে যেন এসব বিষয়ের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্যই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানা যায়, এই কমিটিকে কমিশন ছয়টি ক্ষেত্রে সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করে। এই সুপারিশে বলা হয়, কর্মপ্রক্রিয়ার ছয়টি ক্ষেত্রে যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে তা চিহ্নিত করে এবং এসব সমস্যা সমাধানে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিশনের দেওয়া সুপারিশে বলা হয়েছে, এই কমিটি অনুসন্ধান ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাজে দীর্ঘসূত্রতার কারণ চিহ্নিত করবে। একই সঙ্গে অনুসন্ধান ও তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, ভাবমূর্তি ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্র পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রদান করবে। এছাড়া অনুসন্ধান ও তদন্তসংশ্লিষ্ট দায়িত্বের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাভিত্তিক কাজের পরিমাণ ও ভারসাম্য পর্যালোচনা করে মতামত প্রদান করবে।

সুপারিশে আরও বলা হয়, অনুসন্ধান এবং তদন্ত কাজ পরিচালনার সময় অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মকর্তা বা অপর কোনো কর্মকর্তা কর্তৃক দুর্নীতি বা অভিযোগের আওতাধীন ব্যক্তিকে হয়রানি করার সুযোগের ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করবে। একই সঙ্গে তা নিরসনের জন্য সুপারিশ করবে।

অন্যদিকে, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট অভিযোগসমূহ পর্যালোচনা করে করণীয় বিষয়ে মতামত প্রদান করবে। সেই ক্ষেত্রে কমিশনের সুনাম ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। এই কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

সুপারিশ প্রসঙ্গে দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, কমিশনের নির্দেশে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুদকের কর্ম প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং জনবান্ধব করার ক্ষেত্রে এই কমিটির সুপারিশ কমিশনের উপস্থাপন করা হবে। আমরা ঘরে-বাইরে সকলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আইনগতভাবেই অঙ্গীকারাবদ্ধ।

এই বিষেয় কমিটির প্রধান, বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান এর ব্যক্তিগত ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, আমিতো এই মূহুর্তে ছুটিতে আছি। এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অফিসে আসলে বলতে পারবো।

দুদক সূত্র জানায়, এর আগে একই উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বে ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে দুদক যেসব সুপারিশ পাঠিয়েছে সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, সে সম্পর্কে করণীয় নির্ধারণে দিক-নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনরোধ জানিয়ে এক জরুরি পত্র দিয়েছে দুদক।

ঢাকাটাইমস/৬মে/এসআর/এমআর