পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে দিনমজুরের স্ত্রী’র বাজিমাত

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২১, ১২:২৫ | আপডেট: ০৭ মে ২০২১, ১২:২৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে শুরু থেকে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন দিনমজুরের স্ত্রী চন্দনা বাউরি। খুব সাধারণ ঘরের এই নারী নির্বাচনে চমক দেখিয়েছেন। নির্বাচনে চন্দনা চার হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন তৃণমূলের সন্তোষ কুমার মণ্ডলকে।

নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার সালতোরা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা

চন্দনা বাউরির নিজের অ্যাকাউন্টে ছিল ছয় হাজার ৩৩৫ টাকা। তিনি বসবাস করেন মাটির ঘরে এবং তার বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগও নেই।

ভারতের কেন্দ্র ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অনেক হাই-প্রোফাইল নেতা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে হেরেছেন। তবে, ব্যতিক্রমী ছিলেন চন্দনা বাউরি। খুব সাধারণ পরিবারের এই নারী সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এক বিজয় অর্জন করেছেন।

৩০ বছর বয়সী চন্দনার সব ধরণের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৩১ হাজার ৯৮৫ টাকা। আর, তার স্বামীর সম্পদের মূল্য মাত্র ৩০ হাজার ৩১১ টাকা। তিন সন্তানের জননী চন্দনার পরিবারে তিনটি গরু ও তিনটি ছাগল আছে। তার স্বামী শরবন বাউরির নিয়মিত আয়ের কোনো উৎস নেই। তাদের নিজেদের কোনো কৃষিজমিও নেই।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামে চন্দনার বাড়িতে দুপুরে খেতে যান। তখন থেকেই আলোচনায় আসে এই পরিবারটি। চন্দনার বাড়িতে অমিত শাহসহ ও অন্যান্য বিজেপি নেতাদের কলাপাতায় ভাত, রুটি, ডাল, পটল ভাজা, শুক্ত, আলু-পোস্ত ও পাঁপড় দিয়ে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে আরও ছিল বাংলার বিখ্যাত রসগোল্লা, সন্দেশ ও দই।

কিন্তু, সেদিন দুপুরেও চন্দনা বাউরি জানতেন না তার জন্য কত বড় চমক অপেক্ষা করছিল। বিজেপি যে তাকে বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেবে তা অজানা ছিল সবার। আর যখন তিনি মনোনয়ন পেলেন, সেই খবরটাও জেনেছিলেন এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে।

বাঁকুড়া জেলায় একটি নির্বাচনী সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করা চন্দনাকে ‘বাংলার আশা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। চন্দনার নাম উচ্চারণ করে ভোটারদের কাছে তাকে ভোট দিতেও অনুরোধ করেন তিনি।

বিজেপি যখন তাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার নির্বাচনী এলাকার অনেকেই তখনো তার নাম শোনেনি কিংবা জানত না। চন্দনার বিধানসভা জয়ের গল্পটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। টুইটার, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ভরে গেছে অভিনন্দনবার্তায়। চন্দনার এ বিজয় যেন সাধারণ মানুষের জন্য এক অনুপ্রেরণা।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/কেআই)