মমতার কোল
হাঁটবো কতো, আর কতো কাল ধরে
পথের মাঝে জোনাক পোকা গুনবো?
আর কতো কাল হুতুম পেঁচার স্বরে
বনবাদাড়ে বেসুরো ভুতুড়ে গান শুনবো?
আমার পথের শেষের খোঁজে খোঁজে
পা চলে না বুকে সাহস ধরে,
ক্লান্তিতে চোখ কেবল আসে বুঁজে
পথহারা মন ফিরতে যে চায় ঘরে।
ঘর খুঁজেছি পরের দেশে ঘুরে
অচিন দেশে ঘর মেলা যে ভার,
মাটির বুকে খানিক ভিটি জুড়ে
ঘর গড়েছি রঙের চটকদার।
সেই ঘরও যে হয় না আমার ঘর
দেয় না আমায় স্বত্ব মালিকানা,
বলে,ওরে তোর ঘরে তুই পর
মিলবে না তোর স্বত্ব সিকি আনা।
আমার ডিঙ্গি বেয়ে ঘাটে ঘাটে
কত্তো যাত্রি হচ্ছে খেয়া পার,
আমি একা তেপান্তরের মাঠে;
বন্ধ যখন খেয়া পারাপার।
পারের কড়ি আছে সবার গাঁটে
আমার গাঁটে নাই যে কানাকড়ি,
আমার বেলা গড়ায় অস্তপাটে
আমি আজো কুড়াই কুটো-খড়ি।
আমার এখন সময় হলো যাবার
নৌকো আছে ভাঙ্গা ঘাটে বাঁধা,
এপারে আর কিচ্ছু যে নেই পাবার
পসরা গুঁটায় চুমকি গোলকধাঁধা।
ঘাটের নাও কি আমায় নেবে তুলে
সেই নায়ে কি আমার হবে ঠাঁই?
আমার কথা সবাই গেছে ভুলে
ঘাটে আমার পায়ের ছাপও নাই।
সুদূর থেকে কে যে আমায় ডেকে
বললো, ওরে আমাকে নে চিনে,
সবাই যারে ভুলছে একে একে
আমিই তারে বুকেতে নেই টেনে।
তার ভরসায় ধূসর অচিন পথে
চলছি একা ভবনদীর কূলে,
তার পাঠানো পুষ্প হাওয়ার রথে
ফিরবো আমি তার মমতার কোলে।
-