মার্কেট জনসমুদ্র, তোয়াক্কা নেই স্বাস্থ্যবিধির

কাজী রফিক ও কৌশিক রায়, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ মে ২০২১, ১৯:০৬ | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২১, ১৮:০৪

ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেও মার্কেটসহ সব দোকানপাট খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে শর্ত ছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যদিও বেশির ভাগ ক্রেতা ও দোকানি তোয়াক্কা করছেন না স্বাস্থ্যবিধির। ঈদের আগের শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে।

শুক্রবার রাজধানীর নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনি চক, টোকিও স্কয়ার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বেশ কিছু মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

সকালে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বারবার মাইকিং করা হচ্ছে। মাইকের আওয়াজ ক্রেতা-বিক্রেতাদের কান পর্যন্ত পৌঁছালেও তা মানতে দেখা যায়নি মার্কেটের বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাকে।

কম দামে নারীদের পোশাক পাওয়া যায় রাজধানীর এমন মার্কেটের মধ্যে কৃষি মার্কেট অন্যতম। আকারে ছোট এই মার্কেটটির ভেতরে চলাচলের জায়গাও বেশ কম। মার্কেটের ভেতরের অংশে চলাচলের গলি দিয়ে দুজন পাশাপাশি হেঁটে যাওয়ার মতো জায়গা নেই। সেখানে গিয়ে দেখা গেল মানুষের প্রচণ্ড ঠেলাঠেলি।একে অন্যের সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলাচল করছে। মার্কেটের সামনের ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় আরও বেশি। সেখানেও নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই।

সামাজিক দূরত্ব না মানার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি এই মার্কেটের কেউই।

একজন বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মানুষ মানবে কীভাবে! সারাদিন মাস্ক পরে কি থাকা যায়! এগুলো আপনারা আর আপনাদের সরকার বোঝে না?’

এদিকে সকাল থেকেই রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। দুপুর নাগাদ সে ভিড় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নিউ মার্কেটের ভেতরে অংশে চলাচলের পুরো রাস্তায় মানুষ ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর দোকানে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বলছে, আজ যেন চাঁদ রাত।

নিউ মার্কেটের চাইতে বেশি ভিড় ছিল নারীদের মার্কেট হিসেবে পরিচিত চাঁদনি চকে। মার্কেটের প্রবেশদ্বারে জীবাণুনাশক টার্নেল বসানো হয়েছে। টার্নেটের ভেতর দিয়েই ক্রেতাদের মার্কেটের মধ্যে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তবে টার্নেল দিয়ে মার্কেটের ভেতরে ঢুকতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। আর মার্কেটের ভেতরে প্রবেশের পর সামাজিক দূরত্ব যেন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে মার্কেটটিতে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হচ্ছে নিউ মার্কেট ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে। সেখানে কোনো জীবাণুনাশক টার্নেল নেই। ব্রিজটির উপরে এবং নিচে হাজার হাজার মানুষের ভিড় করোনাভাইরাস সংক্রমণের অশনি সংকেত দিচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে এখানকার ব্যবসায়ীরাও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অনাগ্রহী।

তবে চাঁদনি চক মার্কেটের একজন দোকানি অভিযোগ করেন, ফুটওভার ব্রিজের উপর দুই পাশে হকার বসার কারণে ফুটওভার ব্রিজে চলাচলের জায়গা কমে গেছে। ফলে সরু জায়গা দিয়ে ক্রেতাদের চলাচল করতে হচ্ছে।

রাজধানীর আদাবর এলাকা থেকে সপরিবারে নিউ মার্কেটের ঈদের কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম জানান, এত ভিড় হবে জানলে তিনি মার্কেটে আসতেন না।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে আসছি, ভেবেছিলাম ভিড় থাকবে না। এখন তো এখানে হাঁটার ব্যবস্থা নাই। বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছি।’

ভিড়ের কারণে সাইফুল ইসলাম স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মার্কেট ত্যাগ করলেও বেশির ভাগ ক্রেতাই এই ভিড় ঠেলে ঈদের কেনাকাটা করছেন। এই জনসমুদ্রে ঈদের পোশাক-পরিচ্ছদ কিনতে আসা অনেকের মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে মার্কেটে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আবার মার্কেট কর্তৃপক্ষের থেকে এ বিষয়ে তদারকির জন্য সে রকম ব্যবস্থাপনা চোখে পড়েনি।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/কারই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :