‘পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার খবর সঠিক নয়’

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২১, ১৯:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

করোনা মহামারির কারণে বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা নাকচ করে দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানিয়েছেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০২২ সালের জুনেই এই সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

শুক্রবার বিকালে নিজের সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।   

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বেড়েছে। আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়িয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে এক বছর পর দেশের বৃহত্তম এ সেতু যান চলাচলের উপযুক্ত হবে। যাচাই-বাছাই শেষে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সই করেছেন বলেও জানানো হয় খবরে।

তবে এই খবর নাকচ করে দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে করোনার কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে তা সত্য নয়। মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আগামী বছর জুনের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ সমাপ্ত হবে এবং যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ৭ মে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের কাছে একটি স্মরণীয় দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে তৎকালীন তত্ত্বাধায়ক সরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে দিশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কোনো অন্যায় করেননি বলে বুকে ছিল তার অসীম সাহস। এদেশের মাটি ও মানুষই শেখ হাসিনার রাজনীতির মূল শক্তি। তাইতো কোনো ষড়যন্ত্রই দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে সেদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই প্রত্যক্ষ করেছেন ইতিহাসের নানান বাঁকবদল, এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পিতা মুজিব শেখ হাসিনার রাজনীতির গুরু। পিতার মতই ভালোবাসেন দেশের মানুষকে। তাইতো গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে শত বাধা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে এসেছিলেন বলেই সেদিন জনগণের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাধ্য হয়েছিল নির্বাচন দিয়ে সরে যেতে।’

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশরত্ন শেখ হাসিনা শুরু করেন সংকটের আবর্তে নিমজ্জমান অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করে একটি সুখী সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রাম।’

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাত ধরেই এসেছে সমুদ্র বিজয়, দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যার সমাধান তার অসামান্য কূটনৈতিক দক্ষতারই পরিচায়ক। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরণের মাধ্যমে স্বপ্নের সীমানাকে পৌঁছে দিয়েছেন মহাকাশে। নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের সক্ষমতা ও গর্বের প্রতীক পদ্মা সেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে স্বপ্নের কর্ণফুলী টানেল এবং তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের মেট্রোরেল।’

বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে শেখ হাসিনার সাহসী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকার মাঝে সমন্বয় করে করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন উপলক্ষে প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু এবছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কর্মসূচি পরিহার করা হয়েছে।’ তবে শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ঘরে বসেই দোয়া করার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এছাড়াও ওবায়দুল কাদের আগামী ১৭ মে শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে দিবসটি পালন করার আহ্বান জানিয়ে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার জন্য অনুরোধ জানান।

 (ঢাকাটাইমস/০৭মে/টিএ/জেবি)