মুনিয়ার আত্মহত্যায় যেভাবে আলোচনায় শারুন চৌধুরী

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২১, ২১:০৫ | আপডেট: ০৭ মে ২০২১, ২৩:১২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মোসরাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনার পর আলোচনায় আসছে নানা চরিত্র। কাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ‍মুনিয়ার তা নিয়ে মিলছে নানান তথ্য। মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহানের করা মামলার এজাহার এবং এর বাইরে নানা বক্তব্যে মিলছে নানা অসঙ্গতি। এসব বিষয়ই খতিয়ে দেখছে মামলার তদন্তে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মুনিয়ার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল। ওই আলাপনটি ছিল হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরীর (শারুন চৌধুরী) সঙ্গে। যদিও শারুন চৌধুরী অস্বীকার করছেন মুনিয়ার সঙ্গে তার এসব কথাবার্তা হয়নি। স্ক্রিনশটগুলোর সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

মুনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় বড়বোনের মামলার কয়েকদিন পর বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজও আদালতে মামলার আবেদন করেছেন। যেখানে তিনি বোনের আত্মহত্যার পেছনে শারুন চৌধুরীকে দায়ী করার চেষ্টা করেছেন। আদালত বলেছেন, বোনের করা মামলাটি তদন্তের পর ভাইয়ের মামলাটির তদন্ত হবে।

মুনিয়ার ভাই সবুজের করা মামলায় হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর নাম আসায় ঘটনাটি নানা ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। বিভিন্ন তথ্যানুসন্ধান এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্যে, মুনিয়া, তার বোন নুসরাতের সঙ্গে শারুন চৌধুরীর পূর্ব যোগাযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেদিন মুনিয়া আত্মহত্যা করে সেদিনও নুসরাতের সঙ্গে শারুন চৌধুরীর মুঠোফোনে আলাপ হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।

মুনিয়ার আত্মহত্যার পর শারুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছিল সেসব বিষয়ে তিনিও কথাও বলেছেন গণমাধ্যমে। এদিকে চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার পেছনে শারুন চৌধুরী এবং তার অনুসারী-অনুগামী একটি পক্ষকে দায়ী করছে ওই ব্যক্তির পরিবার। মামলাও হয়েছে তাদের নামে। ওই ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তুলে ধরেন। অভিযোগ রয়েছে, আলোচনার তীর নিজের দিক থেকে সরাতে শারুন চৌধুরী মুনিয়ার আত্মহত্যার পর নানা ইস্যুতে সরব হওয়ার চেষ্টা করেছেন।

আরও অভিযোগ রয়েছে, যে রাতে গুলশানের বাসা থেকে মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয় ওই রাতে যে গাড়িতে চড়ে নুসরাত থানায় গিয়েছিলেন সেটি নাকি শারুন চৌধুরী সরবরাহ করেছিলেন। যদিও এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নুসরাত।  

এ ব্যাপারে জানতে শারুন চৌধুরীর মুঠোফোনে কল করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।  

গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানের ওই ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বড়বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষভাবে মামলাটি তদন্ত করছি। তবে, কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে এটা জানতে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর এত টাকা দিয়ে তিনি এখানে বাসা ভাড়া করে কীভাবে থাকতেন, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে টাকা আসত-সবই তদন্ত হচ্ছে। আমরা মুনিয়ার বোনকে থানায় ডেকেছি। দুই-একদিন পর তিনি আসবেন বলেছেন।’

এদিকে মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান সবুজ গণমাধ্যমে জানান, তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম মারা যান ২০১৫ সালে আর মা মারা যান ২০১৯ সালে। এরপর থেকে মুনিয়া সম্পূর্ণভাবে নুসরাত ও তার স্বামীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। ছোট বোনের এ পরিণতির জন্য সবুজ নিজেও তার বোন নুসরাত ও তার স্বামীকে দায়ী করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/কারই/এইচএফ/জেবি)