আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার উদ্দেশে রেকি করেছিল জঙ্গিরা

প্রকাশ | ০৯ মে ২০২১, ১৪:০৮ | আপডেট: ০৯ মে ২০২১, ১৫:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সারাদেশ থেকে আনসারুল ইসলামের জঙ্গি সদস্যরা রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় জড়ো হয়েছিলেন নাশকতার জন্য। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপরে হামলা করা। এ জন্য তারা রেকিও সম্পন্ন করেছিলেন।

রবিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আনসারুল ইসলামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজমের একটি দল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, মো. আব্দুল মুকিত, মো. আমিনুল ইসলাম হক এবং সজীব ইখতিয়ার। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ, একটি চাপাতি, পাঁচটি স্মার্ট ফোন এবং দুইটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল ইসলামের স্বক্রিয় সদস্য। তারা সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোহাম্মদপুরের বসিলায় একত্রি হয়েছিল। আনসারুল ইসলাম সংগঠনের দায়িত্বশীল বা মাসুল ফরিদ ওরফে তারিক ও আবদুল্লাহর সহযোগিতায় সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপস ম্যাসেঞ্জার চ্যাট ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে আটককৃতদের আনসারুল ইসলাম সংগঠনের সদস্য হওয়ার দাওয়াত প্রাপ্ত হয়। পরে তারা আনসারুল ইসলামের সদস্য হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা টেলিগ্রাম অ্যাপস ও অনলাইনে প্রোটেক্টেড টেক্সট নামক সিক্রেট চ্যাটিং অ্যাপস ব্যবহার করে একটি চ্যাটিং গ্রুট তৈরি করে। এতে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করত এবং সংগঠনের আদর্শ প্রচার ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করত।

সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময় গ্রেপ্তারকৃতরা সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই হোটেলের ম্যানেজারকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। এই গ্রুপের সদস্যরা আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে হামলার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়েছিল। তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনলাইনে টেলিগ্রাম অ্যাপসে সায়েন্স প্রজেক্ট শিরোনামে একটি গ্রুপ করেছিল। ওই গ্রুপে ১০ জন সদস্য ছিল। এই গ্রুপের সদস্যরা অক্সিজেন সিলিন্ডারে ব্যবহার করে বড় ধরনের নাশকতার চেষ্টা করেছিল। এ সংক্রান্তে তাদের কাছ থেক ডিভাইস জব্দ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল ইসলামের আদশ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কথিত জিহাদের প্রস্তুতি নেয়। এর জন্য এই গ্রুপের কিছু সদস্য কথিত হিজরত করে আফগানিস্তানে গিয়েছিল। সম্প্রতি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপরে হামলা করে কথিত জিহাদের মাধ্যমে আফগানিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এ লক্ষ্যে তারা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের উপরে হামলার রেকি সম্পন্ন করেছিল।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে মো. জসিমুল হক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অতীশ দীপঙ্করের বিবিএর প্রথম বর্ষের ছাত্র। মো. আবদুল মুকিত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। মো. আমিনুল ইসলাম হক আল হিদায়া ইসলামিক ইনিস্টিটিউটের ছাত্র এবং সজীব ইফতেখার সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী।

ঢাকাটাইমস/০৯ মে/এএ/ইএস