আলস্য আরাম আয়েশের কৃপায়

ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া
 | প্রকাশিত : ০৯ মে ২০২১, ১৫:৪০

আলস্য, আরাম, আয়েশ- এই তিনে মিলে,

তোমাক যখন খায় আকন্ঠ গিলে।

বদ্যির সাধ্যি নেই ব্যাধি সারাবার,

এই তিন রাহু এমন দুষ্ট বিমার।

তোমার বিনাশ কেউ ঠেকাবে না আর?

তুমি না করলে নিজে, নিজের উদ্ধার।

আলস্য লাস্যময়ী লাজরাঙা ঠোঁটে,

চুমোতে চুমোতে কর্মের স্পৃহা নেয় লুটে।

দুবাহু বাড়িয়ে বলে,এসো শুয়ে থাকি,

কাজের জন্য অনেক বেলা আছে বাকি।

কাজইতো করতে হবে সারাটা জনম,

এ সুযোগ নিয়ে নাও খানিকটা দম।

আজকের সব কাজ কালও করা যাবে,

কাজ কি তোমায় ফেলে গর্তে লুকাবে?

জীবনটা খায় গিলে কর্মর ভূত,

আড়মোড় ভাঙারই তো নেই ফুরসত।

তার চেয়ে শুয়ে বসে থাকো ক’টা দিন,

আলস্যে ভরা দিন বড়োই রঙিন।

আরাম-এর মন্ত্রণা দশ কাঠি বেশি,

আলসেমির আবছায়ে করে ঘেঁষাঘেঁষি।

শরীর মালিশ করে মোলায়েম হাতে,

দু’চারটা জমিদারি হাই উঠে তাতে।

আঙ্গুলে তুড়ি মেরে বাড়ায় আরাম,

মনে ভাবে, সুখ মানে কাজের বিরাম।

আয়েশের কাঁধে সে গা এলিয়ে বলে,

‘কাজ ছাড়া জীবন এতো মজাদার হলে-

কোন বোকা কাজ করে জন্তুর মতো,

বরং থাকবো কেবল আয়েশই রত:’

নেশার শরাব সুধায় থাকে বুঁদ হয়ে,

রোজগার সবি শেষ শুয়ে-বসে খেয়ে।

আয়েশের ভাবে থাকে খাতিরদারিতে,

গালিচা মোড়ানো তার বসতবাড়িতে।

আছে লোক লস্কর, সালাম আদাব,

চললে বলনে ফোটে রাজকীয় ভাব।

জানে না যে কোন ক্ষণে সব ভাব সাড়া,

আরাম আয়েশে হলো সম্বলহারা।

দিনে দিনে ছুঁচো ঘোরে চালের হাড়িতে,

উঁই পোকা বাসা বাঁধে চালের খড়িতে।

চুলোর শীতল ছাঁইয়ে ঘুমায় বিড়াল,

দু’বেলা জোটে না পেটে মোটা ভাত-ডাল।

কী এক ঘোরের মাঝে জমিদারি ফানা,

গাঁটে নেই কণাধন, নেই কড়ি কানা।

আয়েশের দরিয়ায় ভাসানো জীবন,

সে জীবন চায় এখন অকাল মরণ।

প্রতিক্ষণে মৃত্যুর বরদান চায়,

আলস্য,আরাম,আয়েশ-এদের কৃপায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :