‘ভোগান্তি আর খরচ বেশি, যাওয়া তো বন্ধ নাই’

প্রকাশ | ০৯ মে ২০২১, ১৯:১৮ | আপডেট: ০৯ মে ২০২১, ২০:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কাজের প্রয়োজনে ঢাকায় থাকেন সবুজ। ঢাকার মিরপুরে মোবাইল ফোনের সরঞ্জাম বিক্রির দোকান আছে তার। সারা বছর ঢাকায় থাকলেও পরিবারের সঙ্গে প্রতি বছর ঈদ করেন তিনি। করোনা মহামারির মধ্যেও তার ব্যত্যয় চান না সবুজ। এদিকে আন্তঃজেলা পরিবহন চলাচল বন্ধ। কিভাবে বাড়ি পৌঁছাবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা। সেই অনিশ্চয়তাকে সঙ্গী করেই বাড়ির পথে রওনা রয়েছেন তিনি। সবুজের গ্রামের বাড়ি ঢাকা থেকে প্রায় ৩২৭ কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায়। 

গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই বাড়ির পথে রওনা হন এই যুবক। রবিবার দুপুরে রাজধানীর গাবতলি সেতুতে ঢাকাটাইমসের সঙ্গে কথা হয় তার। সবুজ জানান, পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থেকে কখনো ঈদ করেননি তিনি। তাই এবারও বাড়ির পানে ছুটেছেন। 

চলতে চলতে সবুজ ঢাকা টাইমসকে জানান, গতকাল এমনকি আজ ভোরেও যারা বাড়ির পথে ঢাকা ছেড়েছেন তাদের সবাই বাড়ি যেতে পেরেছেন। কাউকে ফিরে আসতে হয়নি। ভোগান্তি থাকলেও শেষ পর্যন্ত বাড়ি যাওয়া যাবে এ আশায় গ্রামের যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন তিনি। 

সবুজ বলেন, ‘সরকার তো অনেক বোঝে! গাড়ি চালু রাখলে কি হত? দূরত্ব রেখে যাত্রী নিত। সবাই যেতে পারত। এখনো সবাই যাচ্ছে। আমার পরিচিত অনেক লোক গেছে। শুধু ভোগান্তি হচ্ছে আর খরচ বেশি। যাওয়া তো বন্ধ নাই।’

ইবাদত নামে অপর এক পথচারী বলেন, ‘বাড়ি তো যাওয়াই লাগব। গাড়ি বন্ধ! এখন ভেঙে ভেঙে যাচ্ছি। যমুনা সেতু পর্যন্ত আগে যাই। তারপর অটো বা সিএনজি যা পাই তাতে করে ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাব।’

সবুজ, ইবাদতদের মত হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে গাবতলি সেতু পার হয়েছেন পায়ে হেঁটে। তীব্র গরম ও ভোগান্তি উপেক্ষা করে পুরুষ, নারী, শিশু এমনকি বৃদ্ধরাও যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ির পথে। সেতু পার হয়ে কোনো না কোনো পরিবহন পাওয়া যাবে সে আশায় বুক থেকে এগিয়ে চলেছেন তারা।

এদিকে গাবতলি সেতুতেই বাড়তি ভাড়া আদায়ের বেশ কিছু চিত্র চোখে পড়েছে। আন্তঃজেলা পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় গণপরিবহনের খাতায় নাম লিখিয়েছে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, পণ্যবাহী পিকাপ ভ্যান।

এক্ষেত্রে গাবতলি সেতু থেকে প্রাইভেট কারে করে আরিচা ঘাট পর্যন্ত জন প্রতি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৪০০ টাকা। প্রাইভেট কার চালকরা জানান, সাধারণ সময়ে এ ভাড়ার পরিমাণ থাকে ২৫০ টাকা। তবে সড়কে পুলিশি বাঁধা ও চলমান নিষেধাজ্ঞার কারনে ভাড়া বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। 

এদিকে গাবতলি বাস টার্মিনাল সূত্র জানিয়েছে, গাবতলি থেকে আরিচা ঘাট পর্যন্ত সাধারণ সময়ে লোকাল বাসে জন প্রতি ভাড়া নেয়া হয় ৭০ টাকা। আর সিটিং সার্ভিস হিসেবে পরিচিত সেলফি পরিবহনে ভাড়া নেয়া হয় ১০০ টাকা। অর্থাৎ চলমান পরিস্থিতিতে চার গুণ বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

এছাড়া গাবতলি সেতু থেকে সাভারের হেমায়েতপুর পর্যন্ত ৫০ টাকা হারে যাত্রী পরিবহন করছে পিকাপ ভ্যান ও সিএনজি অটোরিকশা। আর একই দূরত্বে মোটরসাইকেলে ভাড়া গুনতে হচ্ছে দেড়শো থেকে ২০০ টাকা।

ঢাকাটাইমস/০৯মে/কারই